পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (তৃতীয় ভাগ).pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भन्न >७०७ ] शांश्छेत्कल शश्रूिङ्गूलन लिख् ।। * じー> তাহাতে কই ? কল্পনারূপ সমুদ্রের উচ্ছসিত তরঙ্গ বেগ। কই ? বিদ্যুচ্ছটাকৃতি বিশ্বোজ্জ্বল বর্ণনাছটা কোথায় ? তঁহার কবিতাস্রোতঃ কুঞ্জবনমধ্যস্থিত অপ্রশস্ত, মৃদুগতি প্রবাহের ন্যায় ;-বেগ নাই, গভীরতা নাই, তরঙ্গ তর্জন নাই,-মৃদুস্বরে ধীরে ধীরে গমন করিতেছে, অথচ নয়ন শ্রবণ তৃপ্তিকর * ।” সমালোচক মহোদয় এস্থলে কবিকঙ্কণ মুকুন্দরামের কবিতার উল্লেখ করেন নাই। মধুসূদনের কাব্যে যে, অপূৰ্ব্ব কল্পনাবিভ্ৰম আছে, তদ্বিষয়ে বোধ হয়, মতদ্বৈধ নাই। কিন্তু যে কাব্য স্বাভাবিক বর্ণনায় ওঁ জাতীয়ভাবে উন্নত, কাব্যজগতে তাহাই শ্রেষ্ঠ স্থান পাইয়া থাকে। পুস্পাভরণা বনলতা যেমন প্ৰকৃতিপ্ৰদত্ত সৌন্দৰ্য্যে মনোহারিণী হয়, এই কবিতাও সেইরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দৰ্য্যে বিভূষিত হইয়া, পাঠকের চিত্ত আকর্ষণ করিয়া থাকে। যত্নসাধ্য কৃত্রিম শোভা এই সৌন্দৰ্য্যের সমক্ষে পরাজয় স্বীকার করে। মুকুন্দরামের কবিতা অযত্নসস্তুতা, প্রাকৃতিক সৌন্দৰ্য্যে গৌরবান্বিত বনলতার সদৃশ। উহাতে কৃত্রিমতা নাই ; বিলাসচতুরী নাই ; কঠোরতার সমাবেশ নাই ; উহা অনায়াসলব্ধ সৌন্দর্ঘ্যে আপনিই বিমুগ্ধ : অপরেও সেই সৌন্দৰ্য্যের রসাস্বাদনে বিমুগ্ধ। মুকুন্দরাম এই গুণে বঙ্গীয় কবিকুলের মধ্যে প্রধান স্থান অধিকার করিয়াছেন। আর মধুসুদন পাশ্চাত্য ভাবতরঙ্গের উচ্ছাস দেখাইয়া, যে প্ৰতিভার পরিচয় দিয়াছেন, তাহার গুণে কবিসমাজে সন্মানিত হইয়াছেন। ফলতঃ মধুসূদনের কবিতা কৃত্রিমতায় আচ্ছন্ন। অযত্নসস্তুত প্ৰাকৃতিক সৌন্দৰ্য্য শিল্পকৌশলের সহিত সংযোজিত হইলে যেমন স্থলীবিশেষে অধিকতর উজ্জল এবং স্থলান্তরে অপরিস্ফুট ও অনুজ্জল হয়, মধুসূদনের কবিতাও সেইরূপ কোথাও উজ্জল এবং কোথাও বা অনুজ্জল হইয়াছে। শিল্পী ধীরে ধীরে নানা দিক দেখিয়া, প্রাকৃতিক বিষয়ের উপর আপনার শিল্পচাতুরীর পরিচয় দিয়া থাকে ; প্ৰাকৃতিক বিষয়টি যে ভাবে রাখিলে ভাল হয়, ধীরতার অভাবে বা বিবেচনার ক্রটিতে, সকল সময়ে হয় ত তাহার হস্তে সেই ভাব রক্ষিত হয় না । কাব্যজগতে মধুসুদনও এক জন শিল্পীর তুল্য। তিনি স্বাভাবিক ভাবের উপর শিল্পকৌশলের পরিচয় দিয়াছেন। পাশ্চাত্য প্ৰণালীতে তিনি শিল্পকৌশল শিক্ষা করিয়াছিলেন ; তঁহার কবিতা এই শিল্পকৌশলেই সমুৎপন্ন হইয়াছে। যেখানে তিনি নিজের বাহাদুরি দেখাইবার জন্য অধিকতর কৌশল প্রদর্শনে উদ্যত হইয়াছেন, সেই খানেই তঁহার কবিতা স্বাভাবিক সৌন্দৰ্য্য হইতে বিচ্যুত হইয়াছে। তিনি প্রধানতঃ এই কারণেই কমনীয় প্রাকৃতিক ভাবের সংরক্ষণে বঙ্গের প্রাচীন কবিকুলের নিকটে পরাজিত হইয়াছেন । ” সাহিত্যসংসারের অনেক প্ৰতিভাশালী লেখক, পদ্যরচনায় যেরূপ ক্ষমতার পরিচয় দিয়াছেন, গদ্যরচনাতেও সেইরূপ দক্ষতা দেখাইয়াছেন। মিণ্টন যেরূপ মহাকবি, সেইরূপ প্ৰধান গদ্যলেখক। তঁহার পদ্যে যেরূপ ওজস্বিতা ও গাম্ভীৰ্য্য আছে ; তাহার গদ্যও সেইরূপ ওজস্বিতা ও গাম্ভীৰ্য্যের পরিচয় দিতেছে। আডিসন, গোল্ডস্মিথ প্রভৃতিও

  • শ্ৰীযুক্ত হেমচন্দ্ৰ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের মেঘনাদবধসমালোচনা।

SS