পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (তৃতীয় ভাগ).pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tr সাহিত্য-পরিষদ-পত্রিকা । [ १तभiथ । কবিত্বশক্তির ন্যায় গদ্যরচনায় ক্ষমতা প্ৰদৰ্শন করিয়াছেন। কিন্তু মধুসূদনে এই দুই গুণের সমাবেশ হয় নাই। মধুসুদন হেক্টরবর্ধনামক এক খানি গদ্যগ্রন্থ লিখিয়া গিয়াছেন। কিন্তু তাহার গদ্য যেরূপ প্রাঞ্জলতাপারিশূন্য, সেইরূপ উৎকট, অপ্রসিদ্ধ ও অপ্রচলিত ক্রিয়ার সমাবেশে লালিত্যহীন। মধুসুদন প্রতিভাশালী কবি বলিয়াই পরিচিত। কবিতারাজ্যে তিনি অসামান্য প্ৰতিভা ও কল্পনাচাতুরী প্ৰকাশ করিয়াছেন। গদ্যে র্তাহার ক্ষমতা পরিস্ফুট হয় নাই।“ পূর্বে উক্ত হইয়াছে, সংসারে মধুসূদনের প্রতিদায়ক, মধুসূদনের তৃপ্তিসাধক, মধুসূদনের শান্তিসম্পাদক, কিছুই ছিল না। মধুসুদন সংসারমরুতে তৃষ্ণাকাতর, উদভ্ৰান্ত পান্থস্বরূপ ছিলেন। তঁহার হতাশদ্বদয়ে যে নিদারুণ তুষানল প্রসারিত হইয়াছিল, তাহা কিছুতেই নির্বাপিত হয় নাই। বিলাত হইতে বারিষ্টার হইয়া আসিলেও, তিনি স্বদেশে আপনার অভাবমোচনে সমর্থ হয়েন নাই। চিত্ত সংযমের অভাবে তিনি কি স্বদেশে, কি বিদেশে, সর্বত্রই ঘোরতর অশান্তি, তীব্রতর নৈরাশ্যের জ্বালায় নিরন্তর অস্থির ছিলেন । তঁহার তাপদগ্ধ হৃদয়ে কখনও শান্তিসলিল প্রক্ষিপ্ত হয় নাই। তিনি কয়েকখানি অভিনব কাব্য লিখিতে প্ৰবৃত্ত হইয়াছিলেন, কিন্তু অশান্তি প্ৰযুক্তি কোনও খানি সমাপ্ত করিয়া যাইতে পারেন নাই। সঙ্গতিপন্ন গৃহস্থের একমাত্র পুত্ৰ হইয়াও, তিনি অর্থাভাবে কষ্টের এক শেষ ভোগ করিয়াছিলেন। তঁহার জীবন যেন অনন্ত কষ্টের অদ্বিতীয় প্রস্রবণস্বরূপ ছিল। তিনি বিদেশে থাকিয়া, চতুর্দশপদী কবিতাবলীতে যে মৰ্ম্মজ্বালা প্ৰকাশ করিয়াছিলেন, স্বদেশে প্রত্যাবৃত্ত হইলেও সে জালার বিরাম হয় নাই। কপর্দকশূন্য ভিক্ষার্থও শান্তিসুখের অধিকারী হইতে পারে, কিন্তু মধুসূদনের দূরদৃষ্টে সংসারের সুখ বা শান্তি, কিছুই ঘটে নাই। বঙ্গের প্রতিভাসম্পন্ন হতভাগ্য কবির অনন্তকষ্টময় জীবন এইরূপ অশাস্তিতেই শেষ হয়। চিত্তসংযমের অভাবে, উদ্দাম ভোগালালসার প্রাদুর্ভাবে, নানা বিদ্যা বিশারদ পণ্ডিতেরও কিরূপ দুরবস্থা ঘটে, মধুসূদনের জীবন তাহা দেখাইয়া দিতেছে। মধুসুদন সত্ত্বগুণে আকৃষ্ট হইলে সংসারে উচ্ছঙ্খলভাবের পরিচয় দিতেন না। সত্ত্বগুণের অভাবপ্রযুক্ত তিনি ধৰ্ম্মান্তর পরিগ্রহ পুৰ্ব্বক, স্বকীয় নামে শ্ৰীর পরিবৰ্ত্তে “মাইকেল” এই বিজাতীয় শব্দের ব্যবহার করিয়া, বিজাতীয় ভাবের পরিচয় দেন ; স্বত্ত্বগুণের অভাবে তিনি অপেয় পান ও অখাদ্যভোজনে সন্তোষ প্ৰকাশ করেন ; স্বত্ত্বগুণের অভাবেই তিনি প্ৰিয়তম পরিজনের মমতা পরিত্যাগ পূর্বক আপাতরম্য ভোগলালসায় আকৃষ্ট হইয়া, আপনিই আপনার দুঃসহ কষ্টের কারণ হয়েন। তীব্র সুরা যেন তঁহার জীবনসহচরী হইয়াছিল। তিনি উহার দর্শনে প্রীত হইতেন ; উহার ভ্রাণে উল্লাস প্রকাশ করিতেন ; উহার স্বাদে পরিতৃপ্ত হইয়া উঠিতেন। তঁহার এই তমোগুণময়ী প্রকৃতিই বোধ হয়, তঁহাকে রাক্ষসকুলের সহিত গ্ৰীতিসুত্রে সম্বদ্ধ করিয়াছিল। র্তাহার চরিত্যাখ্যায়ক লিখিয়াছেন-“তঁহার কাব্যসমূহ যেমন বাল্মীকি, হোমার, বাৰ্জিল, মিণ্টন, কালিদাস, দান্তে, ট্যাসো, ভবতি ङ्यङ्ङि