পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (তৃতীয় ভাগ).pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন। ১৩০৩ } মাইকেল মধুসূদন দত্ত। • Y-9 নানা দেশের কবিগণের প্রদত্ত উপাদানে বিরচিত হইয়াছিল, তাহার নিজের প্রকৃতিও তেমনই বহুজনের প্রকৃতির সম্মিলনে সংগঠিত হইয়াছিল। পাণ্ডিত্যে এবং গাম্ভীৰ্য্যে তিনি মিণ্টন ; উচ্ছঙ্খলতা, প্ৰেমপিপাসা এবং অসংযতেন্দ্ৰিয়তায় তিনি বায়ারণ ; ঔদাৰ্য্য এবং মহাপ্ৰাণতায় তিনি বরান্স; আমিন্তব্যয়িতা এবং পরদিনের চিন্তায় ঔদাসীন্য সম্বন্ধে তিনি গোল্ডস্মিথ । * * * মধুসূদনের অবলম্বিত কোন চরিত্রে যদি তাহার প্রকৃতি প্ৰতিবিন্বিত হইয়া থাকে, তবে তাহা তাহার মেঘনাদবধের রাবণেই হই আছে। * * মেঘনাদবধের রাবণ মহামহিমান্বিত সম্রাট, মেহবান পিতা, নিষ্ঠাবান ভক্ত এবং স্বদেশবৎসল বীর । কাঞ্চনসৌধকিরীটিনী, সাগরপরিখা-বেষ্টিত লঙ্কা তাহার পুরী ; বাসববিজয়ী মেঘনাদ তাহার পুত্র ; সাক্ষাৎ জগদ্ধাত্রীরূপিণী প্ৰমীলা তাঁহার পুত্রবধু । * * কিন্তু সকল থাকিয়াও রাবণ দরিদ্র হইতেও দরিদ্র, অনাথ হইতেও অনাথ । সৌভাগ্যগিরির সৰ্ব্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করিয়া, আর কাহারও বুঝি তঁহার ন্যায় অধঃপতন হয় নাই। যে বিকশিত কুসুম তাহার হৃদয় উদ্যান সুশোভিত করিত, যে উজ্জল তারাবলী তাহার জীবনাকাশ জ্যোতিৰ্ম্ময় করিত, বিধিবশে নয়, তঁাহার নিজ দোষে, সে কুসুম অকালে বৃন্তচু্যত, এবং সে তারকামালা অস্তমিত হইয়াছিল । * * রাবণের এই শোচনীয় পরিণামের সঙ্গে পাঠক মধুসূদনেরও পরিণাম চিন্তা করুন। সকল পাইয়াও মধুসূদনের ন্যায় হতভাগ্য কবি বঙ্গদেশে আর জন্মগ্রহণ করেন নাই। সাংসারিক সুখসম্পদের জন্য, মনুষ্য বিধাতার নিকট যে সকল বস্তু কামনা করে, যাড্রা ব্যতিরেকেই তিনি তাহার অধিকাংশ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন । * * তিনি ঐশ্বৰ্য্যশালী পিতার একমাত্ৰ সন্তান ; ভারতের সর্বপ্রধান वि5ांब्रांगदर्शन डिनि बांब्रिलेन ; পৃথিবীর সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট ভাষাসমূহে তিনি সুপণ্ডিত ; দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিগণ র্তাহার সুহৃদ, গুণপক্ষপাতী এবং প্রতিভার উৎসাহদাতা ; সমকালবৰ্ত্তী লেখকগণের মধ্যে প্ৰতিভায় তিনি অগ্রগণ্য ; তঁহার স্বদেশীয় ভাষা এবং স্বদেশবাসিগণ। তাহার গৌরবে গৌরবান্বিত। কিন্তু হায় ! এই উজ্জ্বল মধ্যাঙ্কের পর অতি ঘোরান্ধকারময় রজনী মধুসূদনের জীবনাকাশ আবৃত করিয়াছিল । * * পৃথিবীর কীটপতঙ্গেরও মস্তক রাখিবার স্থান আছে ; কিন্তু বঙ্গের নব্য কবিশিরোমণির তাহাও ছিল না । যে *ब्रांब्रटडांसन (qद९ १झश्रृं८श् अवश्ांन, আমাদিগের শাস্ত্রকারগণ মৃত্যুতুল্য বলিয়া বৰ্ণন করিয়াছেন, মধুসূদনের ভাগ্যে তাহারও অপেক্ষা অধিকতর ক্লেশ ঘটিয়াছিল। আশ্রয়ের অভাবে তাঁহাকে পরগৃহে বাস এবং পরদত্ত পিণ্ডে জীবন রক্ষা করিতে হইয়াছিল ; তঁহার প্রিয়তম পুত্ৰ কন্যাগণ কখনও উপবাসে কখনও পযুসিত অন্নে দিনপাত করিত ; তিনি যাহাদিগকে প্ৰাণের অপেক্ষাও অধিক ভাল বাসিতেন, তাহাদিগের মধ্যে একজন বিনাপথ্যে-বিনচিকিৎসায় প্রাণত্যাগ করিল ; মৃত্যুশয্যায় শয়ন করিয়া, এসমস্তই তাঁহাকে দেখিতে হইয়াছিল। আর সর্বশেষে তিনি নিজে রাজপথের ভিক্ষুকের ন্যায় দাতব্য চিকিৎসালয়ে প্ৰাণ ত্যাগ করিলেন। যাহার রচনা পাঠ করিয়া, সহস্ৰ সহস্ৰ নরনারী