পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (ত্রয়োদশ ভাগ).pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন। ১৩১৩ ] পুড়োজাতির বিবরণ SGS এই আদি কালের মধ্যমপক্ষীয় পুণ্ডরিকগণ এখনও স্থানে স্থানে প্ৰায়ই সাদগোপ ইত্যাদি জাতির ন্যায় 'জলচল’ জাতিরূপে গণ্য হইতেছে। সম্প্রতি মাগুরা মহকুমায় মধ্যমপক্ষীয় পুণ্ডরিক-সমাজের এক ব্যক্তি পুলিস সবইনস্পেক্টর হইয়া অনেক উচ্চবর্ণের সঙ্গে মিশিয়া চলিয়া গিয়াছেন। ইহার নাম নৃপেন্দ্রনাথ প্রকাইটুি। বস্তুতঃ এখন অনেক শিক্ষিত মধ্যমপক্ষীয় পুণ্ডরিক জলচল জাতিরূপে গণ্য হইতেছেন। বর্তমানে ইংরাজীশিক্ষার প্রভাবে হিন্দুর সামাজিক বন্ধন তত দৃঢ় নাই। তাই অনেক নিম্নবর্ণের হিন্দু বিদ্যা শিখিয়া উচ্চবর্ণের সঙ্গে মিলিয়া মিশিয়া চলে। কেশবেশ্বর শিবের প্রসাদে দক্ষিণদেশীয় পুণ্ডরিকগণের অনেক ভূসম্পত্তি এবং মানসন্ত্রম হইতেছে। পুণ্ডরিক-সমাজে এই শ্রেণীর পুড়েগণই অধুনা অনেক উন্নতি করিয়াছে। ইহারাই সেনসেসের রিপোর্টে r পুণ্ডরিক নাম লেখাইয়া বৈশ্য বর্ণ নামে অভিহিত হইয়াছে । আজকাল দেশে যে আভিজাত্যস্রোত প্ৰবাহিত হইতেছে, তাহাতে অধিকাংশ নিম্নবর্ণের হিন্দু বৈশ্য হইয়া উঠিতেছেন। পূর্বে যাহাঁদের কোনরূপ নামগন্ধ ছিল না, এমন অনেক জাতিও বৈশ্য পদবীতে বর্তমানে উন্নীত ; পুণ্ডরিকগণ অধুনা বৈশ্য বলিয়া সমাজে পরিচিত। আমরা যতদূর পারি, অনুসন্ধান করিয়া দেখিয়াছি পুণ্ডরিক-সমাজের মধ্যমপক্ষীয়গণই বর্তমানে এই সমাজে অত্যুন্নত । বাউরিয়া শ্রেণীর পুণ্ডরিকগণ বলে যে, আমাদের জাতির মধ্যে আমরাই প্ৰধান, কেন না। আমরা কোন দিন কোন হীনকাৰ্য্য করি না, বিশেষ আমরা উচ্চবর্ণের হিন্দুগণের সমতুল্য আচার-ব্যবহার করিয়া থাকি । আমরা শূদ্ৰজাতি নই। ভারতে শূদ্র বলিয়া যে এক শ্রেণীর জাতি আছে, তাহারা বৈদিককালের ‘আৰ্য্যগণের দ্বারা পরাজিত জাতি। তাহারাই এই ভারতের আদিম অধিবাসী। আমরা গাৰ্যবৰ্ণ, আমরা কখনও কোন জাতি বা সম্প্রদায়ের দাসত্ব করি নাই, আমাদের পূর্বপুরুষগণ একদিন এই বঙ্গদেশে একটী অতি বিস্তৃত স্বাধীন রাজ্য গঠন করিয়াছিলেন, পৌণ্ডবৰ্দ্ধন তাহার রাজধানী। আমাদের পূর্বনাম পৌণ্ড, নহে-পৌণ্ড্য। রাজা যযাতির অনেকগুলি পুত্র জন্মে, তাহার মধ্যে পৌণ্ড্য একজন। যে সময় যযাতি যৌবন-লাভের জন্য ব্যাগ্রি হইয়া পুত্ৰগণের নিকট যৌবন প্ৰাধির আশা করিয়া প্ৰবঞ্চিত হন, তখন তাহার পুত্ৰগণের অধিকাংশই পিতার অসন্তুষ্টর ভয়ে দিগ্বিদিকে পরিব্যাপ্ত श्न । cय श्रेय র্তাহাকে যৌবন দিয়াছিল, তিনিই পরিশেষে সাম্রাজ্য ভোগ করিয়াছিলেন। অপর পুত্ৰগণ বিতাড়িত হইয়াছিল। এই বিতাড়িত নৃপকুমারগণের মধ্যে পৌণ্ড্যও একজন। ইনিই হস্তিন পরিত্যাগ করিয়া এই জল-জঙ্গল সমাকীর্ণ সমুদ্রতটশালিনী বঙ্গভূমিতে উপস্থিত হইয়া বাস করিয়াছিলেন। ইহারি বংশীয় পৌণ্ডবৰ্দ্ধন নামে নৃপতি যে রাজ্য সংস্থাপন করেন-সেই স্থানের নামই প্ৰাচীন পৌণ্ডবৰ্দ্ধন বা পাণ্ডুয়া। এই পাণ্ডুয়া-দেশজাত दलिग्रा अधून! आभद्रा পৌণ্ড,জাতি বলিয়া গণ্য হইয়াছি। আবার এই পৌণ্ড্য নামক রাজার তিনপুত্র । পরাশর, পরুষরাম, পুরঞ্জয়। এই তিন মহাত্মা আচার অনুষ্ঠানে আস্থাবান হইয়া বেদবিধিসঙ্গত ক্রিয়াপদ্ধতিতে এতদূর উন্নীত হইয়াছিলেন যে, ইহার কালে আমাদের জাতির গোষ্টিপতি হইয়াছিলেন।