পাতা:সিমার - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পিছু-পিছু গেলাম। মাসি বললেন-জনাৰ্দনবাবু, আপনার হােম আপনারই রইল। আমরা আর যাচ্ছি না, আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। তবে শুনে যান, আমি আসলে এখন কারো বউ নাই । আমায় কেউ ছিনিয়ে আনে নি । আমি একই মুদ্ধি। গ্রেফ একা। যান চলে যান। আপনার। আমি অসুখ, একলা থাকতে জনাৰ্দন উঠে পড়লেন । কুন্তলাও । যাবার সময় কুন্তল শিরিনের কাছে এসে বললেন-যুদ্ধ তো কেবল শুরু, শিরিন । দেখতে চাই সোনাভান কেমন অসি চালায় { —আমার যুদ্ধ বোধহয় শেষ হয়ে এল, কুন্তল । আমি যে হেরে যাচ্ছি। কুন্তল বললেন-হারলে তো চলবে না । এই শহরে তোমাদের দুজনকে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে । যেদিন তোমরা বিয়ে করবে, আমি সেদিন আধমান বাতাসা কিনে রাস্তায় ছড়াতে-ছড়াতে যাব । আমার এক মামা, ভালো মোক্তার, ডিভোর্সের মুসাবিদা ভালো করেন। একদিন তুমি আর সাদিক এসো, আমি ব্যবস্থা করে দেব । আজ যাই । পরে আসব। আবার । লাথির টেকি চড়ে ওঠে না। শিরিন । যেমন কুকুর, তেমনি মুগুর দিতে হবে । চলি । उद्धाननिष्ठ भाभवनों छठेव्न । प्रका দুদিন পর মাড়োয়ারির কোথাকার এক ভাগ্নেকে এনে, সেই মাড়োয়ারির চিঠি দেখিয়ে শিরিনমাসিকে রাস্তায় নামিয়ে দিলেন বাবা । যেদিন ওঁকে নামিয়ে দেয়া হল, সেদিন মা আবার এই শহরে ফিরে এলেন । এসেই শুনলেন, মাসি ও-বাড়িতে নেই। মা কথাটা শুনে খুশিই হলেন মনে হল । পৃথিবীর এক নতুন নাটক দেখলাম আমি । মায়ের কি এই ছিল সতীন-বিদ্বেষ ? নাকি মানুষের স্বামী-ভক্তির রূপটাই এমন নির্মম ? তারপর তিন মাস কেটে গেছে । আমার পরীক্ষার রেজাল্ট বেরিয়েছে । কলেজে একাদশ ক্লাসে ভর্তি হয়েছি । জানতাম না, আদালতে মামলা হয়েছে । একদিন বাড়িতে কোট থেকে নোটিশ এল । তার বয়নে বোঝা গেল, মাকে কোর্টে সাক্ষী দিতে হবে । খালামায়ের একটিই সাক্ষী, একমাত্র বিশ্বাসের ঠাঁই । কিন্তু ওঁদের আমরা আর দেখতে পাই না। শিরিন কিংবা সাদিকুল। কোথায় ওঁরা চলে গেছেন। একদিন হােমে গেলাম। কুন্তল কিছুই বলতে পারলেন না । 888