পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

৪ গ্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল। তার মধ্যে ওয়াসিলিস ও পাজি পিটার (প্রথম খণ্ড প্রকাশিত) পরবর্তীতে কোনো কোনো গ্রন্থে বা পত্রিকায় পুনর্মুদ্রণের সময় উপেন্দ্রকিশোরের নামেও ছাপা হয়েছিল। সন্দেশে রচনা গুলি স্বাক্ষরহীন থাকায়—এই গল্পট ও আরো দু-একট প্রথম দিকের সদেশে প্রকাশিত রচনা সম্পর্কে আমরা এদের ঘনিষ্ঠ দু-একজনের সাক্ষ্যে যা জেনেছি, তাতে আমাদেরও সংশয় নিরসন হয় নি। কিন্তু যেহেতু আমরা নিশ্চিত নই, তাই স প্রতি সেগুন স কুমার রায়ের নামে মুদ্রিত হওয়ায়, আমরাও সেই রচনাগুলি সুকুমার সমগ্র রচনাবলীতেই স্থান দিয়েছি। এরও আগে মুকুন পত্রিকায় তাঁর বাল্যরচনা নদী (জ্যৈষ্ঠ, ১৩০৩) ও টিক-টিক-টং (জ্যৈষ্ঠ, ১৩০৪) এবং আশ্বিন ১৩১৩ সংখ্যায় সম্ভবত তাঁর প্রথম গদ্যরচনা সুর্যের রাজ্য প্রকাশিত হয়েছিল। সন্দেশে প্রকাশিত তাঁর অন্যান্য রচনা এই খণ্ডে জীবজন্তুর কথা ও নানা নিবন্ধের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রথম খণ্ডে প্রকাশিত রচনাগুলির পর বর্তমান খণ্ডে অবশিষ্ট প্রায় সকল রচনাই সংকলিত হল। শুধুমাত্র ভাষা ও সাহিত্য, আলোকচিত্র ইত্যাদি সম্পর্কে ইংরাজি ও বাংলায় তার ‘গুরুতর’ কয়েকটি প্রবন্ধ এর অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি। এ ছাড়া, তাঁর মাত্র বারো-তেরো বছরের সামগ্রিক সাহিত্যিক জীবনের আরো কিছু কিছু রচনা হয়তো ইতস্তত ছড়িয়ে থাকতে পারে—যদি সেই রচনাগুলির ভবিষ্যতে সন্ধান প্রকাশ পায় তাহলে আমরা সেই সমস্ত রচনা নিয়ে পৃথকভাবে একটি তৃতীয় খণ্ড প্রকাশের বাসনা রাখি। কিন্তু সেই নতুন প্রকল্প আমাদের কাছে আদৌ স্পষ্ট নয়।

 বর্তমান খণ্ডে বিবিধ কবিতা পর্যায়ে ‘ফাজিলের ডিকশেনারি (রঙমশা, পূজাবার্ষিকী ১৩২৭) ও কলিকাতা কোথা রে’ ন্যাশনাল বুক এজেন্সী প্রকাশিত সুভাষ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত পাতাবাহার সংকলন গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। কবিতা দুটি সংগ্রহ করে দিয়েছেন শ্রীসনৎকুমার গুপ্ত ও বন্ধুবর শ্রীঅশোককুমার মিত্র। এ ছাড়াও সনৎবাবু বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছেন। এদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

 যার সর্বক্ষণের পরামর্শ ও উপদেশ আমাকে এই কাজে উৎসাহী করেছে-সেই সর্বজন শ্রদ্ধেয়া লীলাদির (শ্রীমতী লীলা মজুমদার) ঋণ আমার কাছে অপরিশোধ্য।

 এই বই বিলম্বে প্রকাশের কারণ হিসেবে প্রকাশিকা তার বক্তব্য রেখেছেন। কিন্তু অন্য একটি গুরুতর কারণ হচ্ছে—বাজারে প্রচলিত বইয়ে অনেক ক্ষেত্রেই সুকুমারের সম্পাদিত’ যে চেহারা আমরা পেয়েছি, সুকুমারের ‘মল রচনা’র সঙ্গে তার প্রভেদ অনেকখানি—এ বিষয়টি আমাদের এতই সংশয়িত করেছে যে এ সম্পর্কে সঠিক সতর্ক সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের কিছু বেশি সময় লেগেছে। বর্তমান খণ্ডে প্রত্যেকটি পর্যায়ের রচনার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক তথ্য ও ‘পাঠ'-প্রসঙ্গের উল্লেখ আছে। মোটামুটিভাবে প্রায় সর্বক্ষেত্রেই আমরা সন্দেশের পাঠ এবং প্রকাশিত কালানুক্রম অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি। এ ব্যাপারে সব থেকে গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি-ইস্কুলের গল্প পর্যায়ে। তাই এই গল্পগুলির পাঠ প্রসঙ্গে দু-একটি কথা বলা প্রয়োজনবর্তমান পর্যায়ে এই গল্পগুলির সন্দেশে মুদ্রিত পাঠ'কেই আমরা প্রায় অবিকৃতভাবে অনুসরণ করেছি। অপ্রচলিত ও প্রচলিত বিভিন্ন সংস্করণে গল্পগুলির যে মুদ্রিত পাঠ পাওয়া যায়, তার সঙ্গে সন্দেশের মুদ্রিত ‘পাঠ’-এর অনেক ক্ষেতেই গুরুতর পার্থক্য আছে। এ ক্ষেত্রে যদি ধরে নিই যে, সেগুলি সর্বক্ষেত্রেই সুকুমার রায় স্বয়ং সম্পাদনা করেছেন, তা হলে এমন কিছু কিছু অসংগত ও অসমঞ্জস অংশ আছে, যার দায়িত্ব লেখকের উপর চাপালে, তাকেই সব থেকে বেশি অস্বস্তিতে ফেলা হবে। অন্যান্য প্রচলিত “পাঠের সঙ্গে বর্তমান ' 'ঠের তুলনামূলক বিচার করলেই সচেতন পাঠকের কাছে এই বক্তব্য প্রমাণিত হবে। এই পরিস্থিতিতে বংগত পাঠ’ নির্ধারণ করতে গিয়ে তৃতীয় আর-একটি পাঠ’ প্রস্তুত করতে গেলে জটিলতা আরো বৃদ্ধি পডেবেই সে প্রচেষ্টা থেকে বিরত হয়েছি। এমন-কি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সম্পাদিত পাঠ অনুসরণ করলে অপেক্ষাকৃত ভালো হত এ কথা ভেবেও, সে প্রলোভন সম্পাদককে সম্বরণ করতে হয়েছে। যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নি যে প্রচলিত সম্পাদিত পাঠ’ স্বয়ং খেকেরই, সে ক্ষেত্রেও কৌতুহলী পাঠক এখানে অন্য-একটি দুষ্প্রাপ্য ‘পাঠ'-এর সঙ্গে প্রচলিত ‘পাঠ'-এর তুলনামুলক পরিচয়ে সামগ্রিকভাবে সুকুমার রায়কে বিচারের সুযোগ পাবেন। এত ব্যাপকভাবে না হলেও অন্যান্য রচনার ক্ষেত্রেও এই একই কথা প্রযোজ্য।

 যারা অক্লান্ত পরিশ্রম ও সহযাপিত্ব ছাড়া আমার পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব হত না—তিনি হচ্ছেন শ্রীমতী