গায়ে লেপ্টে গেছে, কোঁচার ডগায় কাদা, জুতোয় কাদার পিণ্ডি। আমি বললুম, এ কী!
সে বললে, যখন বেরিয়েছিলুম খট্খটে রোদ্দূর। আদ্ধেক পথে আসতে বৃষ্টি নামল। তোমার ঐ বিছানার চাদরটা যদি দাও, তো, কাপড় ছেড়ে গায়ে জড়িয়ে বসি।
হুকুম পাবার সবুর সইল না। চট্ ক’রে খাটের থেকে লক্ষ্ণৌ ছিটের ঢাকাটা টেনে নিয়ে তাই দিয়ে মাথাটা মুছে কাপড় ছেড়ে সেটা গায়ে জড়িয়ে বসল। ভাগ্যিস কাশ্মীরি জামিয়ারটা পাতা ছিল না।
বললে, দাদা, তোমাকে একটা গান শোনাব।
কী করি, ছবি-আঁকা বন্ধ করতে হোলো।
সে সুরু করলে—
ভাবো শ্রীকান্ত নরকান্তকারীরে
নিতান্ত কৃতান্ত ভয়ান্ত হবে ভবে।
আমার মুখের ভাব দেখে তার কী সন্দেহ হোলো জানিনে, জিগেস করলে, কেমন লাগছে?
আমি বললুম, জীবনের শেষদিন পর্য্যন্ত তোমাকে গলা সাধতে হবে লোকালয় থেকে দূরে ব’সে। তারপরে বুঝে নেবেন চিত্রগুপ্ত, যদি সইতে পারেন।
সে বললে, পুপেদিদিও হিন্দুস্থানি ওস্তাদের কাছে গান শেখে, সেইখানে আমাকে বসিয়ে দিলে কেমন হয়।
আমি বললুম, পুপেদিদিকে যদি রাজি করাতে পারে। তা হোলে কথা নেই।
সে বললে, পুপেদিদিকে আমি বড়ো ভয় করি।
৩