পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

 চললুম, আমার শেষ পরামর্শ এই, বৈজ্ঞানিক রসিকতা ছেড়ে দিয়ে ছেলেমামুষি করো যতটা পারো।


 এই কাহিনীটা পুপেদিদির কাছে একটুও পছন্দসই হয়নি। কপাল কুঁচকে বল্‌লে, এ কখনো হয়? নস্যি নিয়ে পেট ভরে?

 আমি বললেম, গোড়াতে পেটটাকেই যে সরিয়ে দিয়েছে।

 পুপুদিদি আশ্বস্ত হয়ে বল্‌লে, ওঃ তাই বুঝি।

 শেষ পর্য্যন্ত ওর গিয়ে ঠেকল কথা না বলাতে। ওর প্রশ্ন, কথা না ব’লে কি বাঁচা যায়।

 আমি বল্‌লুম, ওদের সব চেয়ে বড়ো পণ্ডিত ভূর্জ্জপাতায় লিখে লিখে দ্বীপময় প্রচার করেছেন, কথা ব’লেই মানুষ মরে। তিনি সংখ্যা গণনায় প্রমাণ করে দিয়েছেন, যারা কথা বল্‌ত সবাই মরেছে।

 হঠাৎ পুপুদিদির বুদ্ধিতে প্রশ্ন উঠল—আচ্ছা বোবারা?

 আমি বল্‌লেম, তারা কথা ব’লে মরেনি, তারা মরেছে কেউবা পেটের অসুখে, কেউবা কাশিসর্দ্দিতে।

 শুনে পুপুদিদির মনে হোলো, কথাটা যুক্তিসঙ্গত।

 আচ্ছা দাদামশায় তোমার কী মত?

 আমি বল্‌লুম, কেউবা মরে কথা ব’লে, কেউবা মরে না ব’লে।

 আচ্ছা তুমি কী চাও?

 আমি ভাবছি, হুঁহাউ দ্বীপে গিয়ে বাস করব, জম্বুদ্বীপে বকিয়ে মারল আমাকে, আর পেরে উঠছিনে।



১৪