পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

জানাে না কি আমি অস্পৃশ্য,
মহাত্মা গাঁধিজির শিষ্য?
আমার মাংস যদি খাও।
জাত যাবে জানাে নাকি তাও?
পাযে ধরি করিও না রাগ!
—ছুঁস্‌নে ছুঁস্‌নে—বলে বাঘ।-
—আরে ছি ছি, আবে রাম রাম,
বাঘ্‌না-পাড়ায বদনাম
রটে যাবে, ঘরে মেয়ে ঠাসা,
ঘুচে যাবে বিবাহের আশা
দেবী বাঘা চণ্ডীর কোপে।
কাজ নেই গ্লিসেবিন সােপে।-

 জানো পুপুদিদি, আধুনিক বাঘেদের মধ্যে ভাবি একটা কাণ্ড চলছে— যাকে বলে প্রগতি, প্রচেষ্টা। ওদের প্রগতিওয়ালা প্রচারকেরা বাঘ-সমাজে ব’লে বেড়াচ্চে যে, অস্পৃশ্য ব’লে খাদ্য বিচার করা পবিত্র জন্তু-আত্মার প্রতি অবমাননা। ওরা বলছে, আজ থেকে আমরা যাকে পাব তাকেই খাব, বাঁ থাবা দিয়ে খাব, ডান থাবা দিয়ে খাব, পিছনের থাবা দিয়েও খাব, হালুমমন্ত্র প’ড়েও খাব,না পড়েও খাব,—এমন কি বৃহস্পতিবারেও আমরা আচড়ে খাব,শনিবারেও আমরা কামড়ে খাব। এত ঔদার্য্য। এই বাঘেরা যুক্তিবাদী এবং সর্ব্বজীবে এদের সম্মানবোধ অত্যন্ত ফলাও। এমন কি এরা পশ্চিমপারের চাষী কৈবর্ত্তদেরও খেতে চায় এতই এদের উদার মন। ঘোরতর দলাদলি বেধে গেছে— প্রাচীনরা নব্য সম্প্রদায়কে নাম দিয়েছে চাষী-কৈবর্ত্ত-খেগো—এই নিয়ে মহা হাসাহাসি পড়েছে।

 পুপু বললে, আচ্ছা দাদামশায়, তুমি কখনো বাঘের উপর কবিতা লিখেছ?

৫৯