কহিয়া উঠিলেন, “তুমি আমায় ভুল বুঝেছ বেদানা! তেমন করে তোমায় আমি পেতে চাইনি। আমি স্থির করেছি তোমায় আমি বিয়ে করবো।”
বিদ্যুৎছটার মত দীপ্ত হইয়া উঠিয়া সুষম উচ্চকণ্ঠে কহিয়া উঠিল আপনি আমায় বিয়ে করবেন! আমাকে! নিশ্চয়ই আপনার মাথার ঠিক নেই; কিম্বা—”
নরেশ মনের মধ্যে ঈষৎ লজ্জানুভব করিলেও তাহা গোপন রাখিয়া সপ্রতিভভাবেই হাসিয়া উত্তর করিলেন, “আমি পাগলও হইনি, নেশাও করিনি, সহজ সজ্ঞানেই এই প্রস্তাব করছি এবং এ সম্বন্ধে আমার সঙ্কল্প স্থির হয়ে গেছে,—তা আর বদলাবে না।”
শুনিয়া সুষমার মুখের ভাব অত্যন্ত কঠিন হইয়া উঠিল, সে তাহার শানিত ছুরিকার মতই উজ্জ্বল ও তীক্ষ দৃষ্টি নরেশের আবেগময় নেত্রের উপর স্থির করিয়া তেমনি নির্ম্মমকণ্ঠে জবাব দিল—“কিন্তু আমি আপনার প্রস্তাবে সম্মত নই। আমি আপনার স্ত্রী হতে চাইনে।”
নরেশের মুখের ছবি বিস্ময় ও বেদনাহত হইয়া উঠিল “সে কি!— সুষমা! তুমি কি আমায় তবে ভালবাস না?”
বন্দুকের গুলি খাইয়া ছোট পাখীটী যেমন ঘুরিয়া পড়ে, তেমনি করিয়াই মুহ্যমান সুষমা আবার নরেশের পায়ের তলায় ফিরিয়া বসিয়া পড়িল। অনাহত চোখের জলকে প্রাণপণে রোধ করিতে করিতে অর্দ্ধব্যক্তস্বরে সে কহিল, “আপনার এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সঙ্গত কিনা ভগবানই জানেন। কিন্তু জ্ঞানতঃ আমার শরীর মন দিয়া এজন্মে আমি কোন পাপই করিনি, তাই মনের মধ্যে আপনার পূজো করাকে আমার পক্ষে দুঃসাহস বোধ করিলেও তাতে পাপ করেছি বলতে পারি না। আপনি আমার দেবতা,—আমার দেবতারও বাড়া—আমার ঈশ্বর! আপনাকে মিথ্যা আমি কেমন করে বল্বো? কিন্তু যদি কখন