হাইকোর্ট বন্ধ ছিল; বাহিরের ঘরে দুই বন্ধুতে বসিয়া বসিয়া চাখিয়া চাখিয়া কোন সুপেয় পদার্থ পান করিতে নিযুক্ত ছিলেন। হঠাৎ বাজনার শব্দ ভেদ করিয়া সুর সঙ্গীত লহরী কাণের তারে ঝঙ্কার দিল। উৎকর্ণ হইয়াছিলেন দু’জনেই, কিন্তু অল্প পরে সুরেশ্বর সবিস্ময়ে বলিয়া উঠিল “একি! কে গাইচে বলতো? আশ্চর্য্য যে!”
মিঃ গুহ বলিলেন “গাইচে আমার স্ত্রীর শিক্ষয়িত্রী সুষমা দাসী। আশ্চর্য্য বল্চো কেন? হ্যাঁ, তা বল্তেই পার।—হোয়াট্ অ্যান্ এক্সকুইজিট রীচ্ ভয়েস্! কিন্তু–”
বন্ধু এসব কথাগুলো কাণে না তুলিয়াই তৎক্ষণাৎ এমনই সুরে উচ্চহাস্য করিয়া উঠিলেন যে মিঃ গুহর মুখের কথা মুখেই রহিয়া গেল। “কি হয়েছে? গলা ওর খুব ভাল নয়?”
বন্ধু সহাস্যে উত্তর দিলেন “কে বল্চে ভাল নয়? তা নয় মাই ফ্রেণ্ড! আমি তোমার জোর কপালের জন্য তোমায় ‘কন্গ্রাচুলেট’ করচি। ‘রথ দেখা এবং কলা বেচা’ একসঙ্গে তাহলে দুইই বেশ চালাচ্চো? আছ মন্দ নয়।”
“রেখে দে তোর হেঁয়ালি! তুই কি চিনিস ওকে?”
সুরেশ্বর ব্যঙ্গ করিয়া বলিল তা আর চিনিনে, সুষমা দাসী যে আমার ‘নেক্সট্ডোর নেবার’। ও গলা শুনেই যে তাই ধরে ফেলেছি। কি করে বাগালে দাদা?”
“আপনিই এসেছে। আচ্ছা ওর ব্যাপারখানা কি বলতো শুনি?
“বল্চি! রাজা নরেশচন্দ্র বাহাদুরের নাম শুনেছ?”
“উঁ হুঁ, কই মনে পড়ে না। তার?”
“হুঁ”
“তা’পরে?”