পাতা:হিন্দু আইন -বিভূতিভূষণ মিত্র.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবাহ ©y এতদ্ভিন্ন, গুরুকন্যা (অর্থাৎ যে গুরু বেদপাঠ করান তাহার কন্যা ), বরের মাতৃনামধারিণী কন্যা, কিংবা যে কন্যা বর অপেক্ষা অধিকবয়স্ক তাহাকে বিবাহ করাও শাস্ত্রনিষিদ্ধ। কিন্তু পূর্বের ন্যায় এক্ষেত্রেও ক্লিবাহ করিলে তাহা অসিদ্ধ হইবে না। কন্যার বিবাহে অভিভাবক । বঙ্গদেশে রঘুনন্দনের নিয়ম প্রচলিত আছে, এবং তাহার মতে নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণ কন্যার বিবাহে অভিভাবক হইতে পর পর ক্ষমতাপন্ন ঃ—পিতা, পিতামহ, ভ্রাতা, সকুল্য ( অর্থাৎ ৪র্থ হইতে ৭ম পুরুষ পৰ্য্যন্ত জ্ঞাতি ) মাতামহ, মাতুল, মাতা । “পিতা পিতামহো ভ্ৰাত সকুল্যে মাতামহো মাতা চেতি । কন্যাপ্রদঃ পূৰ্ব্বাভাবে প্রকৃতিস্থঃ পরঃ পর ॥”—বিষ্ণু, ২৪৩৮-৩৯ ৷ এই নিয়মটা দেখিলেই মনে হয় যে, মাতার স্থান বড়ই শেষে দেওয়া হইয়াছে। সস্তানের শরীর বা সম্পত্তি রক্ষার জন্য হিন্দু আইনে পিতার পরই অভিভাবক রূপে মাতার স্থান নির্দিষ্ট হইয়াছে, কিন্তু কন্যার বিবাহে অভিভাবক হিসাবে তাহার স্থান অত্যন্ত নিম্নে। সম্ভবতঃ বিবাহের ন্যায় একটা সামাজিক কাধ্যে স্ত্রীলোক অপেক্ষা পুরুষেরই বিচারশক্তি অধিক, পাত্র সম্বন্ধে ভাল-মন্দ বিচার স্ত্রীলোক অপেক্ষ পুরুষই ভালরূপ করিতে পারিবে, এই জন্যই শাস্ত্রকারগণ মাতাকে সর্বশেষে স্থান দিয়াছেন । কিন্তু তাহা বলিয়া কন্যার বিবাহে মাতা যে কোনও কথাই বলিতে পরিবেন না, এরূপ নহে। কন্যার ভবিষ্যৎ মঙ্গলের জন্য পিতার যেমন ভাবনা, মাতার ভাবনা তত্ত্ব অপেক্ষ কম নহে ; স্বতরাং যদিও তিনি কন্যার পাত্রনিৰ্ব্বাচন সম্বন্ধুে অধিকারিণী নহেন বটে, তথাপি, যদি কস্তার পিতা কন্যাকে কোন অপাত্রে সম্প্রদান করিতে উদ্যত হন