পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৩১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
TarunnoBot (আলোচনা | অবদান)
Text from Google OCR
 
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
 
(কোনও পার্থক্য নেই)

১৭:৪২, ১০ জুলাই ২০১৮ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ ৩২৩ আমি বলিলাম, বেশ । গল্পের আরম্ভটি বেশ মজার । ‘তবে শোনো । আনন্দে বাপের বাড়ি ফিরিয়া আসিলাম । ক্রমে বয়স বাড়িতে লাগিল। লোকে আমার কাছে লুকাইতে চেষ্টা করিত, কিন্তু আমি নিজে বেশ জানিতাম আমার মতে রূপসী এমন যেখানে-সেখানে পাওয়া যায় না। তোমার কী মনে হয় ? سلسل ‘খুব সম্ভব। কিন্তু আমি তোমাকে কখনো দেখি নাই।’ দেখ নাই ? কেন। আমার সেই কঙ্কাল। হি হি হি হি – আমি ঠাট্ট করিতেছি। তোমার কাছে কী করিয়া প্রমাণ করিব যে, সেই দুটাে শূন্ত চক্ষুকোটরের মধ্যে বড়ো বড়ো টানা দুটি কালো চোখ ছিল এবং রাঙা ঠোটের উপরে যে মৃত্যু হাসিটুকু মাখানো ছিল এখনকার অনাবৃতদন্তসার বিকট হাস্তের সঙ্গে তার কোনো তুলনাই হয় না— এবং সেই কয়খানা দীর্ঘ শুষ্ক অস্থিখণ্ডের উপর এত লালিত্য, এত লাবণ্য, যৌবনের এত কঠিন-কোমল নিটােল পরিপূর্ণতা প্রতিদিন প্রস্ফুটিত হইয়া উঠিতেছিল তোমাকে তাহ বলিতে গেলে হাসি পায় এবং রাগও ধরে। আমার সেই শরীর হইতে যে অস্থিবিদ্যা শেখা যাইতে পারে তাহা তখনকার বড়ো বড়ো ডাক্তারেরাও বিশ্বাস করিত না। আমি জানি, একজন ডাক্তার তাহার কোনো বিশেষ বন্ধুর কাছে আমাকে কনক-চাপা বলিয়াছিলেন। তাহার অর্থ এই, পৃথিবীর আর-সকল মচুন্যই অস্থিবিদ্যা এবং শরীরতত্ত্বের দৃষ্টান্তস্থল ছিল, কেবল আমি সৌন্দর্যরূপী ফুলের মতো ছিলাম। কনক-চাপার মধ্যে কি একটা কঙ্কাল আছে ? ‘আমি যখন চলিতাম তখন আপনি বুঝিতে পারিতাম যে, একখণ্ড হীর নড়াইলে তাহার চারি দিক হইতে যেমন আলো ঝকমক্‌ করিয়া উঠে, আমার দেহের প্রত্যেক গতিতে তেমনি সৌন্দর্যের ভঙ্গি নানা স্বাভাবিক হিল্লোলে চারি দিকে ভাঙিয়া পড়িত। আমি মাঝে মাঝে অনেক ক্ষণ ধরিয়া নিজের হাত দুখানি নিজে দেখিতাম— পৃথিবীর সমস্ত উদ্ধত পৌরুষের মুখে রাশ লাগাইয়া মধুরভাবে বাগাইয়া ধরিতে পারে এমন দুইখানি হাত। স্বভদ্রা যখন অৰ্জুনকে লইয়া দৃপ্ত ভঙ্গিতে আপনার বিজয়রথ বিস্মিত তিন লোকের মধ্য দিয়া চালাইয়া লইয়া গিয়াছিলেন তাহার বোধ করি এইরূপ দুখানি অস্থল স্থডোল বাহু, আরক্ত করতল এবং লাবণ্যশিখার মতো অঙ্গুলি ছিল । o কিন্তু আমার সেই নির্লজ্জ নিরাবরণ নিরাভরণ চিরবৃদ্ধ কঙ্কাল তোমার কাছে আমার নামে মিথ্য সাক্ষ্য দিয়াছে। আমি তখন নিরুপায় নিরুত্তর ছিলাম। এই জন্য পৃথিবীর সব চেয়ে তোমার উপর আমার বেশি রাগ । ইচ্ছা করে, আমার সেই ষোলো বৎসরের