২৩০ নয়া বাঙ্গলার গোড়া পত্তন চালাইতেছে, গল্প লিখিতেছে, ছবি আঁকিতেছে, গান করিতেছে, নতুন নতুন ব্যবসাতে যাইতেছে, নানাদিকে বাঙ্গালীর জীবনটাকে বৈচিত্র্যময়, ঐশ্বৰ্য্যময় করিয়া তুলিতেছে। সকলেই নোট মুখস্থ করিয়া বি-এ পাশ করিতেছে তা নয়। বি-এ পাশ হউক কি ফেল হউক, লেখাপড়ার ফ্যাক্টরীতে তারা যাইতেছে । আগে যেখানে চার-পাঁচ শত ছেলে যাইত, এখন সেখানে যায় বিশ-পচিশ হাজার বা তার কাছাকাছি । সমগ্র মধ্যবিত্তের আয় আগেকার দিনে কোন পল্লীতে একজন লোক মাত্র এন্টান্স পাশ করিয়া দারোগাগিরি কি ডেপুটীগিরি পাইত, কিন্তু তার পোষ্যবৰ্গ ছিল বিশ-পচিশ জন নিষ্কৰ্ম্মা লোক। সে যুগটা এমন কোন গৌরবের যুগ নয়। আজকে এন্টান্স কি বি-এ পাশ করিয়া অথবা ফেল করিরা সেই একজনের জায়গায় ত্রিশ-চল্লিশ-পঞ্চাশ জন লোক মাসিক ২৫৫০।৭৫২ টাকা রোজগার করিতেছে । ধরুন যেন আগেকার দিনে হাজার লোক প্রত্যেক মাসে ১৫ •।২৫০২ টাকা রোজগার করিত । আজ অন্ততঃ তিন লাখ লোক প্রত্যেকেই মাসে ২৫। ৫০।৭৫২ টাকা করিয়া রোজগার করিতেছে। কড়ায় ক্রান্তিতে হিসাব করিয়া কথা বলিতেছি না—ষ্ট্যাটিসটিকস জাহির করা এক্ষেত্রে'এমন সহজও নয়,—আলোচনা-প্রণালীটা মাত্র দেখাইতেছি । দেখাইতেছি যে—সমগ্র মধ্যবিত্ত-সমাজে ধনসম্পদ বাড়িয়াছে। অতএব যদি কেহ বলেন, গোটা মধ্যবিত্তের অবস্থা খারাপ হইতেছে, ত্যাদড়ের পক্ষে সে কথা হজম করা অসম্ভব । মধ্যবিত্তের দুরবস্থা কোথাও কোথাও থাকিতে পারে। কিন্তু সে কালের তুলনায় এ কালের মধ্যবিত্ত বেশী দুরবস্থায় আছে তা স্বীকার করা সহজ নয় ।