বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০২
সুভাষচন্দ্রের জীবনী ও বাণী

কুলে তাহাদের কোনও দুঃখ, কষ্ট, শোক নাই—সে কুলের শ্রীবৃদ্ধি হইয়া থাকে। যে যুগে এদেশের নারীর সম্মান অক্ষুন্ন ছিল সে যুগে মৈত্রেয়ী গার্গীর মত ঋষিপত্নী জন্মিয়াছিল, সে যুগে খনা লীলাবতীর মত বিদূষীর আবির্ভাব হইয়াছিল, অহল্যাবাই ও ঝান্সির রাণীর মত বীর রমণীর অভ্যুদয় হইয়াছিল। এ সোনার বাঙ্গলায়ও আমরা একদিন রাণী ভবানী ও দেবীচৌধুরাণীর মত রমণী দেখিয়া ছিলাম। আমাদের মাতৃজাতিকে যদি শক্তিরূপিণী দেখিতে চাই তাহা হইলে বাল্য বিবাহ প্রথা উচ্ছেদ করিতে হইবে; স্ত্রীজাতিকে আজীবন ব্রহ্মচর্য্য পালনে অধিকার দিতে হইবে; উপযুক্ত স্ত্রীশিক্ষার আয়োজন করিতে হইবে, অবরোধ প্রথাদূর করিতে হইবে, বালিকাদের ও তরুণীদের স্বাস্থ্যরক্ষার নিমিত্ত ব্যায়াম শিক্ষার এবং আত্মরক্ষার নিমিত্ত লাঠি ও ছোরা খেলা শিক্ষার আয়োজন করিতে হইবে— এমন কি স্বাবলম্বী হইবার মত অর্থকরী শিক্ষা দিতে হইবে, এবং বিধবাদের পুনর্ব্বিবাহের অনুমতি দিতে হবে।

 রাষ্ট্রীয় বিপ্লব করা বরং সহজ কিন্তু সামাজিক বিপ্লব বা সংস্কার সাধন করা তদপেক্ষা কঠিন, কারণ রাষ্ট্রীয় বিপ্লবের সময়ে লড়াই করিতে হয় বাহিরের শত্রুর সঙ্গে। সমস্ত দেশবাসীর ভালবাসা ও সহানুভূতি লাঞ্ছিত সেবককে সঞ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করে। সামাজিক বিপ্লবের সমর লড়াই করিতে হয় দেশবাসীর সঙ্গে, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে। নিজের ঘরে তাহাদিগকে দিবারাত্রি লাঞ্ছনা ও গঞ্জনা সহিতে হয় এবং অখণ্ড সমাজের সহানুভূতি তাহারা কোনদিনও পায় না।