বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 . 有币西-西尔 মুকাল্লা ছেড়ে পাষাণময় নদীখাতের পথ দিয়ে আমরা উত্তরমুখে চলি। বাতাসের আদ্রতা ক্ৰমে কমে আসছে। দিনের উত্তাপ অসহ্য বটে, কিন্তু রাত্ৰিতে শীত পড়ে। আরব দেশের এই অঞ্চল পৃথিবীর উষ্ণতম প্রদেশগুলির অন্যতম-শুধু উত্তপ্ত বলেও নয়, এত বন্ধুর পথও খুব কম দেশেই থাকে। রাস্তা বলে কোন জিনিস নেই, শুধু আছে ধু ধু মরুভূমি আর কেবল পাথর আর পাহাড়-পর্বত। পথ একবার উঠছে, একবার নামছে এক একস্থানে পাহাড়ের খাড়াই এত বেশী যে, সেখান দিয়ে উটের দল নামাতে ভরসা হয় না-একবার পা পিছলে পড়ে গেলে দু’ হাজার ফিট গভীর খডের মধ্যে সবাইকে পড়ে প্ৰাণ হারাতে হবে। . এই ধরণের নদীখাতের পথ পার হয়ে আমরা এলাম “জোলি” বা পৰ্বতময় মালভূমির মধ্যে। চারিধারে শুধু YA." ১৯। অন্তহীন উপলাকীর্ণ মরু দুর চক্রবালরেখা পৰ্য্যন্ত বিস্তৃত। ふ * পাথরের সঙ্গে সম্ভবতঃ ধাতু মিশ্ৰিত আছে, কারণ রৌদ্রে তা চক্ৰ চক করছে। এই “জোল” অঞ্চলের কোথাও জল নেই; গাছপালা। নেই। লোকজনও নেই। Y মাঝে মাঝে জমির মধ্যে বড় বড় গৰ্ত্ত, ছোট বড় পাথরে ভৰ্ত্তি। দু একটা এ রকম গৰ্ত্তের ধারে ধারে সুগন্ধি আরবী ! গাঁদের গাছ। এই জায়গায় একটা পাহাড়ের গুহায় আমরা একদল বেদুইনের দেখা পেলাম। আরবদেশের অন্য স্থানের মত • এরা উটের লোমের তঁবুতে বাস করে না । বেদুইনরা আমাদের দেখে এগিয়ে এসে ঘিরে দাঁড়াল । মেয়েরাও এল । আমার সোনায় বঁধানো দাত দেখে তারা এ خبر . *** - ওকে আঙ্গুল দিয়ে দেখায়-সবাই অবাক হয়ে গেল। আমাদের শুধু গায়ের রং দেখে তারা তো বিশ্বাস করতেই চায় না যে, আমরা গায়ে কোনো প্ৰকার সাদা রং মাখিনি । আমাদের প্রতি নানারূপ প্রশ্নবাণ বৰ্ষিত হতে লাগল। আমরা যখন জন্মেছি, তখন থেকেই কি আমাদের রং সাদা, না, অনবরত সাবান মেখে এরকম হয়েছে। আমরা কি খাই ? দুধ আমরা পান করি কি .*? না ? আমরা কি মাঝে মাঝে রৌদ্রে বেড়াই, না। সব সময়েই *** ঘরের মধ্যে আবদ্ধ থাকি ? সবাই আমাদের রাত্রে থাকতে অনুরোধ করলে । তারা - .... বললে, রাত্রে তারা নাচবে এখন । আমরা অবস্থান করা সম্বন্ধে আমাদের অক্ষমতা জ্ঞাপন করলাম, কারণ আমাদের হাতে সময় অল্প এবং বহুদূর পথে পাড়ি দিতে হবে। ওরা বললে, রাত্রে থাক, তোমাদের প্রত্যেককে একটি স্ত্রী দেব । আমাদের চারি পাশ ঘিরে যে সব কুগ্ৰী স্ত্রীলোক উপস্থিত ছিল, তাদের দিকে চেয়ে আমরা বিশেষ উৎসাহিত হলাম না। ওরা তখনি আমাদের মনের ভাব বুঝে বললে-না, এরা নয় । অল্প-বয়সের মেয়ের পশুদল চরাতে গিয়েছে, সুৰ্য্য অস্ত যাবার সময়ে ফিরবে ।

  • অতিথিপরায়ণ প্রৌঢ় হাদ্রাহামি। "

এখান থেকে রওনা হয়ে আমরা ওয়াদি হাদ্রামাউতের উপনদী ওয়াদি ডুয়ানের দিকে অগ্রসর হই। এখানে আমাদের সৌর তাপক্লিষ্ট চক্ষু সত্যই যেন জুড়িয়ে গেল, ওয়াদি ডুয়ানের তীরস্থ খামল তৃণক্ষেত্র ও বৃক্ষরাজির দিকে চেয়ে।