বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মরুভূমির দেশ আরব । set এখানে গভীর পাষাণতীরের মাঝখান কেটে নদী বয়ে যাচ্ছে চকচকে বালুরাশির উপর দিয়ে। নদীস্রোত থেকে কিছু উৰ্দ্ধে নদীতটের ঢালুতে সবুজ তালীবন। এই মরুদ্বীপকে কেন্দ্র করে এদেশে ছোট বড় জনপদ গড়ে উঠেচে, কারণ মরুভূমির মধ্যস্থ অন্য সব স্থান মনুষ্যবাসের সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত। এই স্থানের বাড়ীগুলি কঁচা ইটের তৈরী এবং প্রায়ই চার পাচতলা উঁচু। মধ্যাহের প্রখর রৌদ্রে এই সহর প্রায় অদৃশ্য থাকে, কারণ ওয়াদি তাঁটের ধূসর ও গৈরিক বর্ণের মাটী পাথর থেকে সহরের বাড়ীগুলোকে পৃথক করে নেওয়া যায় না । উত্তাপের দরুণই বাইরে জনমানবের দেখা নেই, সবাই গৃহমধ্যে বিশ্রামরত। নিম্নের উপত্যকাভূমিতে এবার। নামতে হবে। ছোট সরু পথ একে বেঁকে নেমে গিয়েছে পাহাড়ের গা বেয়ে। সে পাহাড় এত দুরারোহ যে, সেই সংকীর্ণ পথে ভারসমেত উটের দলের নামবার কথা ভাবতেই আমাদের হৃদূকম্প উপস্থিত হ’ল। হাল্লামাই ! প্রাচীন পারস্তের ও রোমের ইতিহাসে সুলতান, বাদশা, বেদুইন পথপ্রদর্শকের উপর থেকে নিম্নভূমি পৰ্যন্ত :::ဇု:: ** দ্বিীপ সারাপথটা নিজেদের ছড়িয়ে রাখলে। দুটি করে উটের - - ভার নিয়েছে। একজন বেদুইন। মনে হল “যে, উটেরাও যেন বুঝতে পেরেছে, তাদের সম্মুখে জীবন-মরণ সমস্ত। একবার যদি কোনো কারণে পা পিছলে যায়, তবে নিয়ের পাষাণময় নদীখাতে পড়ে গিয়ে চুৰ্ণবিচূর্ণ হতে হবে। কিন্তু বেদুইন উষ্ট্রচালকের কৌশল ও কুদর্শন। অথচ গুণবান এবং বুদ্ধিমান উষ্টদলের বুদ্ধির দরুণ সকল বিপদ উত্তীর্ণ হওয়া গেল এবং আমরা উৎরাইয়ের পথে নামকার পরিশ্রমের পরে নিম্নের উপত্যকায় তঁবু খাটিয়ে সে বেলার মত অবস্থান করার উদ্যোগ করলাম। : ওয়াদি ডুয়ানের বৃদ্ধ শাসনকৰ্ত্তা বেশ ভাল লোক । সম্প্রতি তিনি অন্ধ হয়ে গিয়েছেন। তিনি তঁরা পাচতলা কাচা ইটের গাথুনির বাড়ীতে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে নিয়ে গেলেন ও নানা গল্পগুজব করলেন। লোকটি বড় আমুদে । চারতলার উঁচু ছাদ থেকে আমরা নীচের গ্রামের দিকে চেয়ে তার মুখে আমাদের পূর্বে যে ইউরোপীয় ভ্রমণকারীদ্বয় এসেছিলেন, তঁদের গল্প শুনছিলাম । যদিও সে অনেক দিনের কথা, তবুও বৃদ্ধ বা-সুরা সে ঘটনা স্মরণ করে রেখেছেন। এর একটা প্ৰধান কারণ এই যে, এই সব স্থানে নতুন কিছু বড় একটা ঘটে না। জীবন এখানে পাষাণময়, ওয়াদি প্রাচীরের মতই অটল ও বৈচিত্র্যহীন। এই একঘেয়ে জীবনে হঠাৎ যদি কিছু নতুন দেখা যায়, তা হলে লোকে তা মনে রেখে দেয় চিরকাল । বা-সুরার আবাসস্থান ঠিক যেন মধ্যযুগের একটি দুর্গ। সেই রকম প্রাচীর, তোরণ, বুরুজ, গম্বুজবিশিষ্ট । আমরা একটা বড় লোহার ফটক পার হয়ে প্রাসাদে প্ৰবেশ করি । তারপর বড় একটা হল, তার চারিধারে সশস্ত্র রক্ষী সৈন্যদল। মাঝখানে পুত্রপৌত্ৰগণ পরিবৃত অন্ধ বা-সুরা। শাসনকৰ্ত্তার অতিথিস্বরূপ আমাদের প্রতি যে সম্মান প্ৰদৰ্শিত भूख कांडी औठान।