পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় অপ্রকাশিত দিনলিপি.pdf/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৭ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৪ । ৫ই ফাস্তুন, ১৩৪৬ । শনিবার পোসো ইত্যা । বেল ৭ টা । এইমাত্র ট্রেনে এখানে নেমে চাইবাসা রোডে ঘন জঙ্গলের ধারে বসে লিখচি । কি বনস্পতি দুধারে। অনেক জায়গায়। লতা ঝোপ ঝোপে। ফুল ফুটে আছে। এত বড় বড় গাছ যে অন্ধকার চারিদিক । পাথর আছে। তবে কিছু কম । বনাই বেশী। অদ্ভুত বন [-] বনস্পতি গাছই বেশী। তলায় undergrowthও আছে। খুব নিৰ্জন বনের কতরকম পাখী ডাকৃচে । নিবিড় ঘন জঙ্গল-এখন আবার একটা পাথরের ওপর বসে লিখচি। বনে আমলকী ফলে আছে। বেলা হয়েচে আটুটা-এখনও রোদ পড়েনি বনের মধ্যে - কি একটা পাখী ডাকৃচে । কেমন একটা আদ্ৰতা । শাল, কেঁদ, পিয়াল, আমলকী বেশি। ফুল হয় এমন গাছ খুব কম। বসন্তের শোভা কৈ ? ন’টা বেজেচে-কলকাতায় এতক্ষণে ছুটুতে হোত স্কুলে। মণীন্দ্ৰ বসুর পত্ৰখানা জঙ্গলে বসে পড়চি ৷ বাবার লেখাটা সেই হিন্দী স্রেফ শুনি। মণীন্দ্ৰবাবু নামে একজন বাঙ্গালী ভদ্রলোকের সঙ্গে আলাপ হোল । আসবার সময় surrenda-র বন পাহাড় দেখে অবাক হয়ে গেলুম। জানালায় দাড়িয়ে চারিধারে চেয়ে দেখি এ ঠিক যেন আমেরিকার সেই ফটোতে দেখা বনের মত। এরই ফটো তুললে খুব দেখাবে ভাল । বন খুব denseও আছে যেখানে নদী বা ঝর্ণা। ওরকম গুঙ্গল পথে আর কোথাও নেই। চক্ৰধরপুর, সিনি প্ৰভৃতি দুপুর রোদে খাঁ খ্যা করচে যেন মরুভূমি। বাংলাদেশের কথা মনে পড়ল-এই প্ৰথম বসন্তে সেখানে বাড়ী বাড়ী বাতাবী লেবুর ফুল ফুটেচে, কচিপাতা গাছে গাছে গজিয়েচে, শ্যাম ছায়া পড়ে এসেচে বঁাশবনের মাটীর পথটীর পরে- ঘেটু ফুল ফুটেচে মাঠের পথের দুধারে- এদেশ ও সে দেশ ? এদেশ রুক্ষ্ম, ধূসর কিন্তু বড় সৌন্দৰ্য্যশালী। এর রুক্ষ সৌন্দৰ্য্য অস্তৃত । সিনি স্টেশনে যেতে খানিকটা ওদিকে অর্থাৎ রাজখর্সাওনের দিকে হাতীর মত curious formation a Pitts ast sfs aft es k vitě-voké | বৈকালে আমি ডাক্তার ও ছোট মামা নেকৃড়াডুংরী পাহাড়ে উঠলাম। খুব শিলা বৃষ্টি হোল। এমন দিন কমই দেখেচি। 圣文 ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৪ । ৬ই ফাস্তুন, ১৩৪০ । রবিবার রবিবার। এদিন ছোটমামা চলে গেল একটার গাড়ীতে । আমি স্টেশনে বেড়াতে গিয়ে সাপ দেখলুম। চন্দ্ররেখা গ্রামের কাছে পাহাড়টায়। রাস্তার ধারে কতক্ষণ বসে রইলুম সেদিন রাতে পাহাড়ের ওপর। সাপ দেখি ।