বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মাণ্ডূক্যোপনিষদ্‌ - প্রথম খণ্ড (রামদয়াল দেবশর্ম্মা).pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

చీy মাংকোপনিষদ । g দিয়া স্কুল বিষয় মাত্র ভোগ করে। কাজেই বিষয়ভোগের সুখ দুঃখ, রাগ দ্বেষে ইহারা সৰ্ব্বদা ব্যাকুল। ইহারা পুনঃ পুনঃ জনন মরণদোলায় দুলিতে থাকে। আবার ইহারা স্বপ্নকালে স্থূল বিষয়ভোগ ছাড়িয়া মন দ্বারা স্থূল বিষয়ের সূক্ষ সংস্কাররূপ যে বাসন, সেই বাসনা সমূহকে অন্তরিদিয় মন দ্বারা ভোগ করে এবং সুষুপ্তি অবস্থায় ইন্দ্রিয়ম্পন্দন ও মন:স্পন্দন শূন্য হইয় অজ্ঞানের কোলে, অবিদ্যার কোলে, অবিবেকের কোলে মোহাচ্ছন্ন হইয়া ঘুমাইয়া পড়ে। কিন্তু যাহারা সাধক, তাহারা ইন্দ্রিয়গণ যখন বিষয় লইয়া খেল করিতে চায়, তখন ইন্দ্রিয় সমূহকে রোধ করিতে চেষ্টা করেন । মনে কর, কর্ণ যেন বহু শব্দ শুনিতেছে। সেই সময়ে সাধক যদি চিন্তা করেন এখনি যদি ঘুমাইয়া পড়ি, তবে ত কৰ্ণ খোলা থাকিলেও কোন শব্দ শুনিতে পাওয়া যায় না। কিন্তু ঘুমের সময়ে ও মন স্বপ্ন দেখে । সাধক যাহারা, তাহারা মনকে ভাবনা-রাজ্যের স্বপ্ন দেখান । তাহারা ভাবনারাজ্যে অষ্টদল পদ্ম, তাহার উপর সূৰ্য্য, চন্দ্র, অগ্নিরূপ আসনের উপরে উপবিষ্ট শ্রীভগবানকে বা ভগবতীকে তাহার গুণ ও কৰ্ম্ম চিন্তা করিয়া ভাবনা করিতে থাকেন । কাজেই তখন তাহারা জাগ্ৰংকে স্বপ্নে লয় করেন। বাহিরের ইন্দ্রিয় তখন বিষয় লইয়া জাগিয়া থাকে না ; মন ঐ সময়ে ভাবনা লইয়া জাগিয়া থাকে। ঐ অবস্থা হইতে সাধনার পরিপাক দ্বারা মনঃস্পন্দনও লয় করিয়া তাহারা স্থমুপ্তি অবস্থা লাভ করেন। তাহাও লয় করিলে তবে তুরয়ে স্বরূপ-বিশ্রান্তি লাভ করা যায়। আচ্ছা, আর এক প্রকারে এই বিষয় বলিতেছি শ্রবণ কর । জাগ্রৎ অবস্থাকে স্বপ্নে লয় করা, ইহাই সকল প্রকার সাধনার ভিত্তি । জগৎটা বা দেহটা যাহাই হউক না কেন, যতক্ষণ না ইহা ভুলিতে পারিতেছ, ততক্ষণ স্বরূপ-বিশ্রান্তি কিছুতেই হইতে পারে না। চেতন পুরুষকে দেখিতে দেখিতে যখন আনন্দ পাইবে, তখন চেতন ভিন্ন আর কিছুই অন্ততঃ তোমার কাছে থাকিবে না। তুমি চৈতন্যস্বরূপে স্থিতিলাভ করিবে । ইহারই জন্য ভক্তিপথ ও জ্ঞানপথ ।