মাগুক্যোপনিষদ। 8ፃ প্রচুর আনন্দ থাকা এক বস্তু আর আনন্দ-স্বরূপে স্থিতিলাভ করা অন্য বস্তু। এই তিনি প্রচুর আনন্দ-পূর্ণ, কিন্তু আনন্দ-স্বরূপ নহেন। তিনি আনন্দভূক। লোকে আয়াসশূন্য হইয়া থাকিলে যেমন তাহাকে সুখী বলা যায়, সেইরূপ আয়াসপূন্ত স্বযুপ্তির অধিষ্ঠাতাকে আনন্দভুক্ত অর্থাৎ সুখের ভোক্ত বলা যায়। সর্বপ্রকার স্পন্দনশূন্য ভাবে যে স্থিতি তাহাই হইল নিরতিশয় সুখ। এই সুখে সুখী বলিয়া তিনি আনন্দভুক। ইনি চেতোমুখ। স্বপ্ন ও জাগরণ এই দুই অবস্থার আনন্দ-ভোগের বা জ্ঞানের দ্বারস্বরূপ ইনি। ইনি প্রাজ্ঞ। জাগরণ ও স্বপ্লাবস্থাতে বিশেষ বিশেষ বিজ্ঞান থাকে, কিন্তু এই অবস্থাতে জাগ্রৎ স্বপ্নাবস্থাপেক্ষাও নিরুপাধি জ্ঞান হয় বলিয়া ইনি প্রাজ্ঞ । সেই জন্য এই প্রাজ্ঞ, আত্মার তৃতীয় পাদ । - মুমুক্ষু। মা ! জাগ্রৎ ও স্বপ্নস্থানের কথা বলা হইয়াছে। এখন স্থযুপ্তি কি এবং সুযুপ্তিতে যিনি অভিমান করেন তিনি কি ভাবে থাকেন তাহাই শুনিতে চাই । শ্রীতি। জাগ্ৰং স্বপ্ন এবং সুষুপ্তি এই তিন অবস্থাতে একটা সমতা আছে সেই সমতা হইতেছে তত্ত্বজ্ঞানের অভাব । তত্ত্বজ্ঞানের অপ্ৰবোধটাই হইতেছে নিদ্র । এই তিন অবস্থা তত্ত্বজ্ঞানশূন্য বলিয়া একরূপ হইলেও অন্য বিষয়ে ইহাদের পার্থক্য আছে। জাগ্রও অবস্থাতে স্থূল বিষয়কে জানিবার প্রবৃত্তি থাকে। এইজন্য ইহা দৰ্শনবৃত্তি বিশিষ্ট। কিন্তু স্বপ্নাবস্থা হইতেছে অদর্শন-বৃত্তি বিশিষ্ট। অর্থাৎ স্কুল বিষয়ের দর্শন হইতে ভিন্ন যে জ্ঞান তাহাই থাকে স্বপ্রাবস্থায়। এই জ্ঞানটা কেবল বাসনা মাত্র বলিয়া ইহা অদর্শন । এই বাসনাময়ী বৃত্তি যে অবস্থায় হয়, তাহ হইল স্বপ্ন। স্বপ্নকে সেইজন্য আদর্শনবৃত্তি বলে। কিন্তু সুৰুপ্তিকালে জাগ্রতের মত কোন ভোগেচ্ছ নাই স্বপ্নের মত কোন বাসনাও নাই। এই অবস্থায় আসিলে স্বপ্ত-পুরুষ কোন কাম বা ইচ্ছার কামনা করেন না, কোন স্বপ্নও দেখেন না। স্বযুপ্তি বলে তাহাকে যেখানে কোন ইচ্ছাও থাকে না, কোন স্বপ্নও থাকে না ।