তোমার লাগিয়া মদন ফিরে পাগল হইয়া।
আশমানের চান্দ যেমন আমারে পাইয়া॥
মদন কহিছে “তুমি থাক মর্ত্তপুরে।
একদিন নি দেখিয়ছি আমার রতিরে॥
দই-দুধ বেচ তুমি যাও রাজার বাড়ী।
রতির বিরহানলে আমি জ্বইল্যা মরি॥
কও কও দূতি আমার মাথা খাও।
সত্য কথ। কও মোরে কিঞ্চিৎ না ভারাও॥”
“আমি কইলাম রতি তোমার রাজার ঘর আলা।
জনম লইয়াছ কন্যা নামেতে কমলা॥
বাড়ীঘরের কথা কইলাম বাপ-মায়ের নাম।
উবুৎ হইয়া[১] মদন করে আমারে পন্যাম॥
একখানি পত্র মদন যত্নেতে লিখিয়া।
যত্ন করি আঁচে[২] মোর দিয়াছে বান্ধিয়া॥
আচল খুলি গাছল[৩] কথা পরীক্ষা যে কর।
তোমার বিরহে মদন করে দড়ফড়[৪]॥
এত কষ্ট করিলাম তোমার লাগিয়া।
স্বর্গ পুরে গেছি আমি দধি-দুগ্ধ লইয়া॥
উঠিতে যোজন সিড়ি কমর ভাঙ্গ্যা পড়ে।
আমি বইল্যা গেছি কন্যা অন্যে যাইতে মরে॥
আইন্যাছি মদনের পত্র দেও পুরস্কার।
এত কাম কর্ত্তে বল সাধ্য আছে কার॥”
বক্সিস মিলিবে ভাল দ্বিজ ঈশান কয়।
মদনের পত্র পড়া আগে উচিত হয়॥
পত্র খুলিয়া কন্যা পড়িতে লাগিল।
পড়িতে পড়িতে কন্যা ক্রোধেতে জ্বলিল॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৮৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৪
মৈমনসিংহ-গীতিকা