পাতা:সাহিত্য-চিন্তা - কুমুদিনী বসু.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সৌন্দর্য্য-তত্ত্ব
৯৭

পতিত হয়?—সৌন্দর্য্য। সৌন্দর্য্যই বিশ্বরাজ্যের সহিত তাহাকে ধীরে ধীরে পরিচিত করিতে থাকে, এবং শিশু-হৃদয়ের সুপ্ত জ্ঞান ক্রমেই বিকশিত হইয়া উঠে। সহস্র অনুভূতির সঙ্গে সৌন্দর্য্য-বোধও তাহার প্রাণে ক্রমে জাগ্রত হয়। যখন সে কাঁদিতে থাকে, একখানি সুন্দর ছবি অথবা একখানি সুন্দর খেলেনা দেখিয়া সে আবার হাসিয়া উঠে। কোন্ বস্তু তাহার নিকট সর্ব্বাপেক্ষা সুন্দর? মায়ের স্নেহ-স্পর্শ, কিংবা মায়ের স্নেহপূর্ণ মুখ! যে নারীকে কুৎসিত কুরূপা বলিয়া জগৎ‍ ঘৃণার চক্ষে দর্শন করে, ক্রোড়স্থিত শিশুর নিকট তাহার মুখখানিও কত সুন্দর! এ সৌন্দর্য্যবোধ কে আনয়ন করিল?—প্রেম। যে জন্মান্ধ,—চিরদৃষ্টিহীন, প্রেমনয়নেই সে মাকে দেখিয়া লয়,—জগতের নিকট পরিচিত হয়। প্রেম ভিতরে থাকিয়া দৃষ্টিহীনের নিকট যে সৌন্দর্য্য ফুটাইয়া তোলে, বাহিরের দৃষ্টিশক্তি তাহার কাছে কোন্ ছার।

 কত যুগ যুগান্তর ব্যাপিয়া দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বৎসরের পর বৎসর, প্রকৃতি একই ভাবে শোভা পাইয়া থাকে, একই সূর্য্য নিত্য প্রাচী উজ্জল করিয়া হাসিয়া উঠে,—একই বৃক্ষ লতা পল্লব বনভূমিকে