পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জষ্টম সংখ্যা। ] ততঃ কিম্। 8 o'S জ্বাদর্শ দেখিতে পাই, তাহ কবে হইতে এবং কতদূর পর্যন্ত দেশে চলিয়াছিল, তাহার ঐতিহাসিক বিচার করিতে আমি অক্ষম। অন্তত এইটুকু নিঃসংশয়ে বলা যাইতে পারে, যাহার সমাজের নিয়ন্ত ছিলেন, তাহাদের মনে শিক্ষার উদ্দেশু কি ছিল ; তাহারা মানুষকে কি বলিয়া জানিতেন এবং সেই মানুষকে গড়িয়া তুলিবার জন্য কোন উপায়কে সকলের চেয়ে উপযুক্ত বলিয়া মনে করিয়াছিলেন। সংসারে কিছুষ্ট নিত্য নয়, অতএব সংসার অসার, অপবিত্র এবং তাঁহাকে ত্যাগ করাই শ্ৰেয়, এইরূপ বৈরাগ্যধৰ্ম্মের শ্রেষ্ঠতা যুরোপে সাধুগণ মধ্যযুগে প্রচার করিতেন। তখন সন্ন্যাসিদলের যথেষ্ট প্রাদুর্ভাব ছিল। যুরোপের এখনকার ভাবখান এই যে, সংসারটা কিছুই নয় বলিয়া মানুষের প্রবৃত্তি ও*নিবৃত্তির মধ্যে একটা চিরস্থায়ী দেবাসুরের ঝগড়া বাধাইয়া রাখিলে মনুষ্যত্বকে খৰ্ব্ব করা হয় । সংসারের হিতসাধন করাই সংসারীর জীবনের শেষ লক্ষ্য —ইহাই ধৰ্ম্মনীতি। এই ধৰ্ম্মনীতিকে প্রবলভাবে আশ্রয় করিতে গেলে সংসারকে মায়াছায়া বলিয়া উড়াইয়া দিলে চলে না। এই সংসারক্ষেত্রে জীবনের শেষদও পৰ্য্যস্ত পুরাদমে কাজ করিতে পারাই বীরত্ব—লাগামঞ্জোত অবস্থাতেই মরা অর্থাৎ কাজে বিশ্রাম না দিয়াই জীবন শেষ করা, ইংরেজের কাছে গৌরবের বিষয় বলিয়া গণ্য হয়। সংসার যে অনিত্য এ কথা ভুলিয়া, মৃত্যু যে নিশ্চিত এ কথা মনের মধ্যে পোষণ না করিয়া, সংসারের সঙ্গে চিরন্তন-সম্বন্ধ-স্থাপনের .চেষ্টা করার যুরোপীয়জাতি একটা বিশেষ বল পাণ্ড করিয়াছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নাই। ইহার বিপরীত অবস্থাকে ইহার morbid অর্থাৎ রুগুণ অবস্থা বলিয়া থাকে। সুতরাং ইহাদের শিক্ষার উদ্দেশ্ব এই যে, ছাত্ররা এমন করিয়া মানুষ হইবে, যাহাতে তাহার শেষ পর্য্যঙ্গ প্রাণপণবলে সংসারের কৰ্ম্মক্ষেত্রে লড়াই করিতে পারে। জীবনকে ইহারা সংগ্রাম বলিয়া জানে ; বিজ্ঞানও ইহাদিগকে এই শিক্ষা দেয় যে, জীবিকার লড়াইয়ে যাহারা জেতে,• তাহারাই পৃথিবীতে টিকিয়া যায়। একদিকে “চাইষ্ট চাই, নহিলেই নয়” মনের এই গৃধুভাবকে খুব সতেজ রাখিবার জন্য ইহাদের চেষ্টা, অপর দিকে মুঠাটাও ইহার খুব শক্ত করিতে থাকে। আটঘাট বাধিয়া, রসারসি কষিয়া দশ আঙুল দিয়া ইহার আঁটিয়া ধরিতে জানে। পৃথিবীকে কোনো অংশেই এবং কোনোমতেই ছাড়িব না, ইহাই সবলে বলিতে বলিতে মাটি কামৃড়াইয়া মরিয়া বাওয়া ইহাদের পক্ষে বীরের মৃত্যু। সব জানিব, সব কাড়িব, সব রাখিব, এই প্রতিজ্ঞার সার্থকতা সাধন করিবার শিক্ষাই ইহাদের শিক্ষা । আমরা বলিয়া আসিয়াছি, “গৃহীত ইব কেশেষু মৃত্যুনা ধৰ্ম্মমাচরেং”—মৃত্যু যেন চুলের ঝুটি যরিয়া আছে, এই মনে করিয়া ধৰ্ম্মাচরণ কfরবে। য়ুরোপের সন্ন্যাসীরাও যে এ কথা বলে নাই, তাহা নহে এবং সংসারীকে ভয় দেখাইবার জন্ত মৃত্যুর বিভীষিকাকে তাহার সাহিত্যে, চিত্রে यद नैौनाईट्न প্রত্যক্ষ করি- , বার চেষ্টা করিয়াছে। কিন্তু আমাদের প্রাচীন সংহিতার মধ্যে যে ভাবটা দেখা যায়, তাহার একটু বিশেষত্ব আছে। সংসারের সঙ্গে আমার সম্বন্ধের অন্ত মাই,