বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৮
শকুন্তলা

লেন সখে আমি নিতান্ত অবোধ নহি; কিন্তু আমার মন কোন ক্রমেই প্রবোধ মানে না। কি বলিয়াই বা প্রবোধ দিব। প্রত্যাখ্যানের পর, প্রিয়া প্রস্থান কালে, সাতিশয় কাতরতা প্রদর্শন পূর্বক, আমার দিকে যে বারংবার বাস্পপূর্ণ দৃষ্টিপাত করিয়াছিলেন, সেই কাতর দৃষ্টিপাত আমার হৃদয়ে বিষলিপ্ত শল্যের ন্যায় বিদ্ধ হইয়। আছে। আমি সেই সময়ে তাহার প্রতি যে ক্রুরের ব্যবহার করিয়াছি তাহা মনে করিয়া আমার হৃদয় বিদীর্ণ হইয়া যাইতেছে। মরিলেও আমার এ দুঃখ বিমোচন হইবেক না।

 মাধব্য রাজাকে নিতান্ত কাতর দেখিয়া আশ্বাস প্রদানর্থ কহিলেন বয়স্য! অত কাতর হইও না; কিছু দিন পরে পুনর্ব্বার শকুন্তলার সহিত সমাগম হইবেক। রাজা কহিলেন বয়স্য! আমি এক মুহুর্তের নিমিত্তেও সে আশা করি না! আর আমি প্রিয়ার দর্শন পাইব না। এ জন্মের মত আমার সকল মুখ ফুরাইয়া গিয়াছে। নতুবা, তৎকালে আমার তেমন দুর্ব্বুদ্ধি ঘটিল কেন। মাধব্য কহিলেন বয়স্থ্য! কোন বিষয়েই এত নিরাশ হওয়া উচিত নয়। ভবিতব্যের কথা কে বলতে পারে। দেখ, এই অঙ্গুরীয় যে পুনরায় তোমার হন্তে আসিবে,কাহার মনে ছিল।