পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা ԳՎ) বাড়ী কোথায় জিজ্ঞাসা করিলে তিনি বলেন “ আমার বাড়ী উত্তর রাঢ়ে। অবশু কাঞ্চননগর উত্তর রাঢ়েরই অন্তর্গত। ইনি নিজকে সম্পূর্ণরূপে অপরিচিত জ্ঞাপন করিবার উদেখে আপনাকে বৈদেশিক বলিয়া জানাইয়াছেন। গোবিন্দদাস ত্রখণ্ড হইতে শাস্তিপুরে যাইয়া অদ্বৈতের সঙ্গে দেখা করেন এবং তৎপর শিবানন্দ সেনের সঙ্গে পুনরায় পুরীতে প্রত্যাবর্তন করেন। চৈতন্তচন্দ্রোদয়কৌমুদীতে এই বিবরণটুকু আছে। ইহঁাকে প্রেমদাস “শ্ৰীগোবিন্দ” বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। এখন করচ, যেখানে শেষ হইয়াছে, তাহার পরে এই ঘটনা যোগ দিলে মনে হয় যেন গোবিন্দ দাস যে মহাপ্রভুকর্তৃক শাস্তিপুরে যাইতে আদিষ্ট হইয়াছিলেন, তৎপরবর্তী খানিকট। বিবরণ পাওয়া গেল । চৈতন্যচরিতামৃতে দৃষ্ট হয় শিবানন্দ সেন পুরীতে আসিলে গোবিন্দ দাস নামক শূদ্ৰ জাতীয় এক ব্যক্তি “আমি ঈশ্বর পুরীর ভূত্য” এই পরিচয় দিয়া মহাপ্রভুর সেবাবৃত্তি গ্রহণ করিয়াছিলেন। এই সেবকের মত ভক্ত ও অস্তরঙ্গ মহাপ্রভুর খুব কমই ছিল। ইনি বৈষ্ণবইতিহাসের সুপ্রসিদ্ধ ‘শ্ৰীগোবিন্দ'। এখানে গোবিন্দদাস যদি নিজ পরিচয় দিতেন, তবে শশিমুখী সংবাদ পাইলে তাহাকে না লইয়া যাইয়া ছাড়িত না। কিঞ্চি ন হইবৎসর কাল গোবিন্দ চৈতন্তের অমুবত্তী হইয়াছিলেন, মহাপ্রভু যে র্তাহাকে সঙ্গে লইয়। দক্ষিণে গিয়াছিলেন একথা শশিমুখী অবখ্য শুনিয়া প্রতীক্ষা করিতেছিল। এমন অবস্থায় গোবিন্দদাসের আত্মগোপন করা একাস্ত প্রয়োজনীয় হইয়াছিল। কোন কথা নাই, বার্তা নাই, এই সময়ই হঠাৎ ঈশ্বর পুরীর ভূত্য বলিয়া পরিচয় দিয়া গোবিন্দ নামধেয় শূদ্রজাতীয় একটি লোক মহাপ্রভুর এতটা অন্তরঙ্গ হইয়া পড়িলেন, ইহা খুব আশ্চর্য্যের বিষয় বটে। - চৈতন্যচরিতামৃত চৈতন্যচন্দ্রোদয়কে অনুসরণ করিয়া লিখিয়াছেন এত ব্রাহ্মণ তাহার পরিচর্য্যার জন্য উদ্যত থাকিলেও তিনি শুধু ঈশ্বর পুরীর নাম শুনিয়াই শূদ্র ভূত্যটিকে আদর দেখাইয়াছিলেন। বস্তুতঃ এই আদরের সঙ্গে আমরা পূৰ্ব্ব হইতেই পরিচিত। একথা আমরা জানিতে পারিয়াছি যে চৈতন্য কর্তৃক শান্তিপুরে যাইতে আদিষ্ট হইয়া গোবিন্দ তথায় গিয়াছিলেন এবং শিবানন্দ সেনের সঙ্গি পুরী ফিরিয়া আসিয়াছিলেন । পুরী আসিয়া যে মহাপ্ৰভু তাহার প্রাণ, মন, ধ্যানজ্ঞান,—র্তাহাকে ছাড়িয়া তিনি কখনই থাকিতে পারেন নাই ; এবং ঠিক সেই সময় যখন দেপিতেছি, ঈশ্বর পুরীর ভূত্য বলিয়া পরিচয় দিয়া এক গোবিন্দদাস (শূদ্র জাতীয়) প্রভুর পরিচর্য্যায় লাগিয়া গেলেন, তখন আমাদের সহজেই এই ধারণা হয় যে কাঞ্চননগরের গোবিন্দ দাস ভিন্ন মহাপ্রভুর এমন অন্তরঙ্গ ভূত্য আর কেহই ছিল না, এবং দুই গোবিন্দই এক ব্যক্তি, নিতান্ত বাধ্য হইয়াই এই ভাবে তাহার নিজকে ঢাকা দিতে হইয়াছিল। নরহরি তাহারে করিঞা আলিঙ্গন । জিজ্ঞাসিল কোথা বাট কি কায্যে গমন। গোবিন্দ বলেন ঘর উত্তর রাঢ়েতে।"