পাতা:বিশ্বকোষ নবম খণ্ড.djvu/৬৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নস্ত [ ७१s ] নস্তা 梦 “বমনং রেচনং নন্তং নিরূহশ্চামুবাসনম্। জ্ঞেয়ং পঞ্চবিধং কৰ্ম্ম মাত্র তস্য প্রবক্ষতে ॥" (বৈদ্যকপরি) ইহার বু্যির সুশ্রীতে এইরূপ লিখিত আছে— ঔষধ অথবা ঔষধ সহকারে পাককর ভূতাদি নাসিকান্ধারে প্রয়োগ করিবে। ইহারই নাম নস্ত। নস্য দুই প্রকার— শিরোবিরেচন ও স্নেহন। এই দুই প্রকার নস্যও আবার ৫ ভাগে বিভক্ত—নসা, শিরোবিরেচন, প্রতিমর্শ, অবপীড় ও প্রধান। ইহাদিগের মধ্যে নস্য ও শিরোবিরেচন প্রধান। নস্যের বিকল্প প্রতিমর্শ এবং শিরোবিয়েচনের বিকল্পে অবপীড় ও প্রধমন । ইহাদের মধ্যে শূন্তশিরঃ ব্যক্তিদিগের ( অর্থাৎ যাহাদের মাথা থালি থালি বোধ হয়) মস্তিষ্ক স্নিগ্ধকরণের জন্ত, গ্রীব, স্কন্ধ ও বক্ষস্থলের বলজননীৰ্থ এবং দৃষ্টিপ্রসাদনার্থ স্নেহ প্রযোজ্য। মস্তক বায়ুজন্ত অভিভূত হইলে দন্ত, কেশ ও শ্মশ্র প্রপাতে, দারুণ কৰ্ণশুলে ও কর্ণক্ষুেড়ে, তিমিররোগ, স্বরভঙ্গ, নাসারোগ, মুখশোষ, বায়ুরোগ, অকালজাত বলিপলিত, দারুণ বাতপৈত্তিকরোগ ও মুখরোগ প্রভৃতি রোগে বাতপিত্তনাশক দ্রব্য সহ স্নেহ পাক করিয়া প্রয়োগ করিবে । তালু, কণ্ঠ ও মস্তক শ্লেষ্ম কর্তৃক অভিব্যাপ্ত হইলে অরুচি, শিরগৌরবশূল, পীনস, অৰ্দ্ধাবভেদক, ক্রিমি, প্রতিষ্ঠায়, অপস্মার ও গন্ধজ্ঞান না হওয়া, এই সকল রোগে এবং স্কন্ধসন্ধির উদ্ধগত অন্ত প্রকার কফ জন্য বিকারে শিরোবিরেচক দ্রব্য অথবা তৎসহযোগে পাককরা স্নেহ প্রয়োগকরা বিধেয় । এই দুই প্রকার নস্য শ্লেষ্ম-রোগীকে ভোজনের পূৰ্ব্বে, পিত্তরোগীকে মধ্যাহ্নে, এবং বাতরোগীকে অপরাহ্লে প্রয়োগ করিবে। স্নেহনস্য-প্রয়োগের প্রণালী।—দন্তকাষ্ঠ বা ধূমপানের দ্বারা গলনালী প্রভৃতি বিশোধিত হইলে পাণিতাপের দ্বারা গলদেশ, কপোলদেশ ও ললাটদেশ স্নিগ্ধ ও মুছ হইলে বায়ু, আতপ ও রজোহীন গৃহে রোগীকে উত্তানভাবে শয়ন করাইবে। তাহার হস্তপদ প্রসারিত, মস্তক কিঞ্চিৎ বিলম্বিত এবং চক্ষু বস্ত্রে আচ্ছাদিত থাকিবে। বামহস্তের প্রদেশিনীর দ্বারা নাসাগ্র কিঞ্চিৎ উন্নমিত করিয়া ধরিতে হইবে। পরে দক্ষিণ হস্তদ্বারা নাসিকার বিশুদ্ধ স্রোত মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে স্নেহ পাতিত করিবে। পাতিত করিবার কালে চক্ষু পর্যন্ত না যায়, এইরূপ সাবধান হওয়া কৰ্ত্তব্য। স্নেহাবসেচন করিলে শিরঃকম্প, ক্রোধ, ভাষণ, ক্ষবথু বা হাস্য করিবে না। ইহার পরিমাণ প্রদেশিনীর পর্বদ্বয়ে নিঃস্থত অষ্টবিন্দু প্রথম মাত্রা, গুক্তি পরিমাণ মধ্যমাত্রা এবং করতলপরিমিত তৃতীয় মাত্রা । রোগীর বল অনুসারে এই সকল মাত্রা প্রয়োগ করিতে হইবে। স্নেহ-নস্য কোন ক্রমে গলাধঃকরণ হওয়া বিধেয় নহে। প্রযোজিত স্নেহ । শৃঙ্গটিকে প্লাবিত করিয়া যখন মুখমধ্য হইতে নির্গত হয়, তখন তাহাকে আর ধারণা না করিয়া নিষ্ঠাবন করিবে। এইরূপ না করিলে কফ উৎক্লিষ্ট হয়। এইরূপে স্নেহ প্রয়োগ করা হইলে গল, কপোল প্রভৃতি স্থানে স্বেদপ্রয়োগ করিয়া ধূমপান করিবে, এবং অভিয্যন্দী দ্রব্য ভোজন করিবে। রোগী রজঃ, ধূম, স্নেহ, আতপ, মদ্যপান, শিরঃস্নান, যানে গমন ও ক্রোধ পরিত্যাগ করিবে । শিরোবিরেচনের যোগ ও অভিযোগের ফল বলা যাইতেছে। উপযুক্ত পরিমাণে সেবিত হইলে মস্তকের লঘুত, স্বচ্ছদে নিদ্র, প্রবোধ-বিকারের শাস্তি, ইন্দ্রিয়গণের শুদ্ধি এবং মনের স্থখ এই সকল ঘটিয়া থাকে। অধিক পরিমাণে সেবিত হইলে কফপ্রসেক, মস্তকের গুরুতা এবং ইঞ্জির বিভ্ৰম জন্মে। মুদ্ধিদেশ অতি স্নিগ্ধ হইলে রুক্ষ ক্রিয় কর্তব্য। অতি অল্প পরিমাণে সেবিত হইলে ইঞ্জিয়ের বৈগুণ্য, রুক্ষতা ও রোগের অশাস্তি এই সকল লক্ষণ ঘটে। এইরূপ স্থলে পুনরায় মস্যপ্রয়োগ করা উচিত। শিরোবিরেচনার্থ মেহের পরিমাণ রোগীর বল অনুসারে চারি, ছয় বা অষ্টবিন্দু নির্দিষ্ট হইয়াছে। শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতগণ নসাশ্রয়োগেরও শুদ্ধ, হীন ও অভিযোগ এই ত্ৰিবিধ লক্ষণ নির্দেশ করিয়াছেন। ইহা উপযুক্তরূপে সংশোধিত হইলে মস্তকের লঘুত, স্রোতপথের শুদ্ধি, ব্যাধিজয়, মন ও ইঞ্জিয়ের প্রসন্নত, শিরঃশুদ্ধি এই সকল লক্ষণ ঘটয়া থাকে। মূদ্ধিদেশ ইনরূপে শোধিত হইলে কণ্ডু, উপদেহ, শুদ্ধতা ও স্রোতপথে কফের সংশ্রব এই সকল লক্ষণ ঘটে । অতিশোধিত হইলে মস্তলঙ্গ ক্ষরণ, বায়ুবুদ্ধি, ইন্দ্রিয়বিভ্রম, মস্তকের শুষ্ঠত, মুদ্ধিদেশ গাঢ় বিরেচিত হইলে এই লক্ষণ সকল প্রকাশ পায়। হীন ও অতিশুদ্ধির স্থলে কফবাতনাশক প্রক্রিয়া করিতে হইবে । মস্তক সম্যক বিশোধিত হইলে মস্তকে ঘৃতসেচন করিবে। বায়ু কর্তৃক দেহ অত্যন্ত অভিভূত হইলে একদিন, দুইদিন, সপ্তাহ বা পুনঃ পুনঃ অথবা দিবসে দুইবার নস্তপ্রয়োগ করা যাইতে পারে। মেধাসম্পন্ন ভিষকৃগণ যে স্থলে যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবেন, সেইখানে সেইরূপ নস্তপ্রয়োগ করিবেন। শিরোবিরেচনের দ্যায় অবপীড়ও অভিযালারোগে ও সর্প দংশনজন্য অচৈতন্তে প্রযোজ্য। শিরোবিরেচক দ্রব্যের মধ্যে কোন দ্রব্য পিষিয়া চূর্ণ করিবে। চিত্তবিকার, কৃমি ও বিষাভিপরোগীর নাসারন্থ, নলের দ্বারা সেই চূর্ণ প্রয়ােগ করিতে হইবে। ক্ষীণ ব্যক্তির রক্তপিত্তরোগে শর্করা, ইক্ষুরস, স্থা, ঘৃত ও মাংসরস এই সকলের মধ্যে কোন একটর নন্ত প্রয়োগ