পাতা:রজনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*○や রজনী । ইচ্ছুক হয়েন নাই। এইরূপ সম্বন্ধ করিতে করিতে আমার পিতার পরলোকপ্রাপ্তি হইল। পরিশেষে, পিতার স্বর্গারোহণের পর আমার এক পিঙ্গী এক সম্বন্ধ উপস্থিত করিলেন। গঙ্গাপার, কালিকাপুর নামে এক গ্রাম ছিল। এই ইতিহাসে ভবানীনগর নামে অন্ত थे;ाब নাম উত্থাপিত হইবে ; এই কালিকাপুর সেই ভবনীনগরের নিকুটস্থ গ্রাম। আমার পিসীর শ্বশুরালর সেই কালিকাপুরে । সেইখানে লবঙ্গ নামে কোন ভদ্রলোকের কন্যার সঙ্গে পিসী আমার সম্বন্ধ উপস্থিত করিলেন । তুম্বন্ধের পূৰ্বে আমি সবাকে সৰ্ব্বদাই দেখিতে পাইতাম। আমার পিলীর বাড়ীতে আমি মধ্যে মধ্যে মাইতাম। লবঙ্গকে পিষ্ট্র বাড়ীতেও দেখিতাম—তাহার পিত্রালয়েও দেখিতাম । মধ্যে মধ্যে লবঙ্গকে শিশুবোধ হইতে “ ক” রে করাত, “খ”রে খরা, শিখাইতাম । যখন তাহায় সঙ্গে আমার সম্বন্ধ হইল, তণ্ডু হইতে যে আমার কাছে আয় আদিত না। কিন্তু সেই সময়েই আমিও তাহায়ে দেখিবার জন্য অধিকতয় উৎসুক হইয়। উঠিলাম। তখন লবঙ্গের বিবাহের বয়ঃক্রম উত্তীর্ণ হইয়াছিল—লবঙ্গ কলিকা ফোট ফোট হইয়াছিল। চক্ষের চাহনি চঞ্চল অথচ ভীত হইয়া আসিয়াছিল—উচ্চহাস্য মৃদু এবং ব্রীড়াযুক্ত হইয়া উঠিয়াছিল—দ্রুতগতি মন্থর হুইয়া আসিতেছিল। আমি মনে করিতাম, এমন সৌন্দর্য্য কখন দেখি নাই—এ সৌন্দৰ্য যুবতীর অদৃষ্টে কখন ঘটে না । বস্তুতঃ অতীতশৈশব অথচ অপ্রাগুযৌবনার সৌন্দৰ্য্য,এবং অস্ফুটবাক শিশুর সৌন্দর্য্য, ইহাই মনোহর-ফেবনেয় সৌন্দৰ্য্য তাশ নহে। যৌবনে বসনভূষণের ঘট, হাসি চাহনির ঘট,-বেণীর দোলনি, বৃহরণ বলনি, গ্রীবার হেলনি, কথার ছলনি-যুবতীর রূপের বিকাশ