পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৪২ আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী ছিলেন। অর্থাৎ আমার প্রতিপাদ্য এই যে জাতিভেদরূপ বিষময় প্রথার এই ফল দাড়িয়েছে যে আমাদের দেশে যারা হীন শ্রেণীর তারা এমন পদদলিত, অবমানিত, ঘৃণিত, লাঞ্ছিত, অবজ্ঞাত, যে কোন সুযোগে তাদের প্রতিভা বিকশিত হবার ও ভদ্রশ্রেণীস্থ হবার উপায় নেই। সুতরাং বর্ত্তমান যুরোপ বা আমেরিকায় জাতিভেদ আছে, অতএব আমাদের দেশেও জাতিভেদ কোন ক্ষতির কারণ হ’তে পারে না— এই ব’লে চীৎকার ক’রে র্যারা পুরাতনের কঙ্কাল এখনও অঁাকড়ে ধ’রে রাখতে চান, র্তারা একবার যুক্তিসহকারে বিবেচনা ক’রে বুঝে দেখবেন যে পাশ্চাত্য দেশে আভিজাত্যের সম্মান এদেশের মত একট। নিছক পাগলামি নয়। র্তাতি, জোলা, গাড়োয়ানের ঘর থেকে এদেশে কজন বড়লোক হবার সুযোগ পেয়েছে ? এদেশে যদি তেলির ঘরে জন্ম হ’ল ত মানুষ চিরকাল তেলিই রয়ে গেল,—সে যত গুণের গুণী হোক না কেন সমাজে খানিকটা ইেট হয়ে থাকতেই হবে, গুণ থাকলেও সমুচিত আদর সে কখন পাবে না। শ্রীযুক্ত সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন সিংহ আজ লর্ড হয়েছেন বিলাতী আভিজাত্যের নিয়মে, কিন্তু আমাদের দেশে যিনি কুলীন বামুন হয়ে না জন্মেছেন তিনি আর তা হ’তে পারবেন না। লর্ড রবার্টস জীবনের প্রারম্ভে ছিলেন সামান্ত সৈনিক ; কিন্তু সামরিক বিভাগে অসাধারণ গুণপনার পরিচয় দিয়ে শেষে সমাজে শ্রেষ্ঠ আভিজাত্য লাভ করিয়াছিলেন। লর্ড কিচনারও তাই। এরূপ আরও অনেকের মাম করা যেতে পারে যারা বিস্তাবিজ্ঞানে, ব্যবসাবাণিজ্যে, কৃষিশিল্পে সর্ব্বপ্রকার কর্ম্মক্ষেত্রে গুণের পরিচয় দিয়ে, অসাধারণত্ব দেখিয়ে, সামান্ত থেকে বড় হয়ে উঠেছেন এবং পাশ্চাত্য সমাজ তাদের বড় ব’লে, শ্রেষ্ঠ ব’লে, গুণান্বিত ব’লে আদর ক’রে বরণ ক’রে নিয়েছে। ইংলণ্ডে চাষার ছেলে, মুনীর ছেলে, অক্সফোর্ড বা কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক