পাতা:পৃথিবী.djvu/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[৬৯]

ভাসিতে লাগিল। ক্রমে তরল পৃথিবীর সমস্ত পৃষ্ঠদেশ এইরূপ জমাট পদার্থ রাশিতে আবৃত হইয়া তাহার উপরের দিব্য এক আবরণ সৃষ্ট হইল। কিন্তু এই সূক্ষ্ম আবরণে আভ্যন্তরিক জোয়ার ভাঁটা রোধ করা অসম্ভব, সুতরাং সেই আবরণ ভেদ করিয়া মাঝে মাঝে তরল পদার্থরাশি প্রচণ্ড বেগে উদ্ধে ক্ষিপ্ত হইতে লাগিল। তখনকার পৃথিবীর অবস্থা-সেই উত্তপ্ত পদার্থরাশির ভীষণ বলে কম্পমান পৃথিবীর সেই ভীষণ অবস্থা—বর্ণনা অসম্ভব। সেই উৎক্ষিপ্ত পদার্থ রাশি ক্রমে শীতল হইয়া পর্বত শ্রেণীরূপ ধারণ করিল।

 আমরা এখন পর্বতশ্রেণীসমাকীর্ণ, বাষ্পরাশি আবৃত উত্তপ্ত মরুময় পৃথিবী দেখিতে পাইতেছি। এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে একবিন্দু জল নাই। পৃথিবীর উত্তাপ যখন আরো হ্রাস হইল, যখন শূন্যে ভাসমান জলীয় বাষ্পের বাম্পাকারে থাকা অসম্ভব হইল। তখন সেই বাষ্পরাশি জমিয়া উত্তপ্ত জলাকারে পৃথিবীতে পতিত হইল। পৃথিবীর উপর প্রথম বৃষ্টিপতন এক নূতন যুগের আরম্ভ। উষ্ণ পৃথিবীর উপর বৃষ্টি পড়িবামাত্র তাহা আবার উষ্ণ বাষ্পকারে উঠিয়া গেল, শীতলাকাশের সংস্পর্শে আবার শীতল হইয়া বৃষ্টিরূপে পড়িল। জলের এই ঘন ঘন অবস্থা পরিবর্তন দ্বারা মুহুর্মুহু বজ্রধ্বনিতে বিদ্যুতালোকে, অন্ধকারাচ্ছন্ন পৃথিবী তোলপাড় হইয়া উঠিল॥