পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

क्षाशै সেদিন আমি কিছুতেই আপনাকে আর সামলাতে পারলুম না। আমি জানতুম, ও-পাড়ার বোসের তাদের বেয়াই-বাড়ির পাওয়া সন্দেশ-রসগোল্লা পাড়ায় বিলিয়েছিল। কাল রাত্রে আমাদেরও কিছু দিয়েছিল। শাশুড়ী ঘরে ঢুকতেই বলে ফেললুম, কালকের খাবার কি কিছুই ছিল না মা ? তিনি একেবারে আকাশ থেকে পড়ে বললেন, খাবার আবার কে কিনে আনলে বৌমা ? . বললুম, সেই যে বোসের দিয়ে গিয়েছিল ? তিনি বললেন, ও মা, সে আবার কটা যে, আজ সকাল পর্য্যন্ত থাকবে ? সে ত কালই শেষ হয়ে গেছে। বললুম, তা ঘরেই কি কিছু খাবার তৈরি করে দেওয়া যেত না মা ? শাশুড়ী বললেন, বেশ ত বেীমা, তাই কেন দিলে না ? তুমি ত বসে বসে সমস্ত শুনছিলে বাছা ? চুপ করে রইলুম। আমার কি-ই বা বলবার ছিল। স্বামীর প্রতি আমার তালবাসার টান ত আর বাড়িতে কারো অবিদিত ছিল না । চুপ করে রইলুম সত্যি, কিন্তু ভেতরে মনটা আমার জলতেই লাগল। দুপুরবেলা শাশুড়ী ডেকে বললেন, থাবে এস বেীমা, ভাত বাড়া হয়েচে । বললুম, আমি এখন খাব না, তোমরা খাও গে। আমার আজকের মনের ভাব শাশুড়ী লক্ষ্য করছিলেন, বললেন, থাবে না কেন শুনি ? বললুম, এখন ক্ষিদে নেই। আমার মেজজা আমার চেয়ে বছর-চারেকের বড় ছিলেন। রান্নাঘরের ভেতর থেকে ঠোকর দিয়ে বলে উঠলেন, বটুঠাকুরের খাওয়া না হলে বোধ হয় দিদির ক্ষিদে হবে না, না ? শাশুড়ী বললেন, তাই না-কি বৌমা ? বলি, এ নতুন ঢঙ শিখলে কোথায় ? তিনি কিছুই মিথ্যে বলেননি, আমার পক্ষে এ ঢঙই বটে, তবু খোটা সইতে পারলুম না, জবাব দিয়ে বসলুম, নূতন হবে কেন মা, তোমাদের সময়ে কি এ রীতির চলন ছিল না ? ঠাকুরদের খাবার আগেই কি খেতে? তবু ভাল, ঘনশ্বামের এতদিনে কপাল ফিরল ! বলে শাশুড়ী মুখখানা বিকৃত করে রান্নাঘরে গিয়ে ঢুকলেন । মেজজায়ের গলা কাণে গেল। তিনি আমাকে শুনিয়েই বললেন, তখনই ত বলেছিলুম মা ! বুড়ো শালিক পোষ মানবে না। ᎸᏜᏄ