১২
ঝগড়ুকে বললেম, কোথায় আছে সেই বাঁদরটা। যেখানে পাও বোলাও উস্কো।
এল সে তার কাঁটাওয়ালা মোটা গোলাপের গুঁভির লাঠিখানা ঠক্ঠক্ করতে করতে। মালকোঁচামারা ধুতি, চাদরখানা জড়ানো কোমরে, হাঁটু পর্য্যন্ত কালো পশমের মোটা মোজা, লাল ডোরাকাটা জামার উপর হাতাহীন বিলিতি ওয়েষ্টকোট সবুজ বনাতের, সাদা রোঁয়াওয়ালা রাশিয়ান টুপি মাথায়, পুরোনো মালের দোকান থেকে কেনা,—বাঁ হাতের বুড়ো আঙুলে ন্যাকড়া জড়ানো, কোনো একটা সদ্য অপঘাতের প্রত্যক্ষ সাক্ষী। কড়া চামড়ার জুতোর মস্মসানি শোনা যায় গলির মোড় থেকে। ঘন ভুরুদুটোর নিচে চোখদুটো যেন মন্ত্রে-থেমে-যাওয়া দুটো বুলেটের মতো।
বললে, হয়েছে কী। শুক্নো মটর চিবচ্ছিলুম দাঁত শক্ত করবার জন্যে, ছাড়ল না তোমার ঝগড়ু। বললে, বাবুর চোখ দুটো ভীষণ লাল হয়েছে, বোধ হয় ডাক্তার ডাকতে হবে। শুনেই তাড়াতাড়ি গয়ল। বাড়ি থেকে এক ভাঁড় চোনা এনেছি, মোচার খোলায় ক’রে ফোঁটা ফোঁটা ঢালতে থাকো, সাফ হয়ে যাবে চোখ।
আমি বললুম, যতক্ষণ তুমি আছ আমার ত্রিসীমানায়, আমার চোখের লাল কিছুতেই ঘুচবে না। ভোরবেলাতেই তোমাদের পাড়ার যত মাতব্বর আমার দরজায় ধন্না দিয়ে পড়েছে।
১০৯