পাতা:তারাচরিত.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তারাচরিত।
৩৭

সুধা, মাপ কথা যে শুনিতে পাইব না! সখি অদ্যাবধি আমরা হৃদয়ান্ধকারে কেমন করিয়া থাকিব! এই রূপে মালতী সকরুণ স্বরে বিলাপ করিতে লাগিলেন। তারার যাইবার সকল উদ্যোগ হইয়াছে দেখিয়া মহারাজ সুরতন্‌ বলিলেন বৎসে মালতী আর বিলম্বের প্রয়োজন নাই তারাকে যানারোহণ করাইয়া দাও। এই কথা শুনিবামাত্র তারা ছিন্নমূল তরুর ন্যায় সেই স্থানে ধূলিতে লুণ্ঠিত হইয়া রোদন করিতে লাগিলেন। মহারাজ তারাকে কহিলেন উঠ উঠ বৎসে আর কেন রোদন করিতেছ, আমি মাসে দুই তিন বার তোমাকে যাইয়। দেখিয়া আসিব। রাজা এই প্রকার কত মতে বুঝাইয়া তারাকে তথা হইতে উঠাইলেন। তাহার পর তারা এক জন বৃদ্ধ পরিচারিকাকে বলিলেন মাতঃ আমি আমার হৃদয় রত্ন মালতীকে তোমাকে সমর্পণ করিলাম, অদ্যাবধি ইনি আমার স্থানীয় হইলেন। এই বলিয়া তারা মালতীকে গাঢ় আলিঙ্গন করিয়া যানারোহণ করিলেন।

 যাইতে যাইতে পথিমধ্যে তাঁহারা মনোহর দৃশ্য সকল দর্শন করিতে লাগিলেন। পৃথ্বীরাজ বলিলেন দেখ দেখ প্রেয়সি কেমন বনরাজি সকল সাজিয়া জগতের সৌন্দর্য্য সম্পাদন করিতেছে; ঐ দেখ করিকুল যূথবদ্ধ হইয়া ভ্রমণ করিতেছে; ঐ দেখ মৃগ সকল লম্ফ প্রদান করিয়া মৃগীকে পশ্চাৎ রাখিয়। ধাবমান হইতেছে; বৃক্ষ হইতে পক্ষী সকল বৃক্ষান্তরে উড়িয়া যাইতেছে এবং চঞ্চু দ্বারা স্বীয় শাবককে আহার প্রদান করিতেছে; ঐ দেখ কোকিল কোকিল একত্রে বসিয়া কেমন