পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেঁজুতি २१ মৃত্যুপরপারে। তারি অঙ্গে একেছিল পত্রলিখা আম্রমঞ্জরীর রেণু, একেছে পেলব শেফালিকা সুগন্ধি শিশিরকণিকায় ; তারি সূক্ষ্ম উত্তরীতে গেথেছিল শিল্পকারু প্রভাতের দোয়েলের গীতে চকিত কাকলিসূত্রে ; প্রিয়ার বিহবল স্পর্শখানি স্বষ্টি করিয়াছে তার সর্বদেহে রোমাঞ্চিত বাণী, নিত্য তাহ রয়েছে সঞ্চিত । যেথা তব কর্মশালা সেথা বাতায়ন হতে কে জানি পরায়ে দিত মালা আমার ললাট ঘেরি সহসা ক্ষণিক অবকাশে, সে নহে ভূত্যের পুরস্কার ; কী ইঙ্গিতে কী আভাসে মুহূর্তে জানায়ে চলে যেত অসীমের আত্মীয়তা অধরা অদেখা দূত, বলে যেত ভাষাতীত কথা অপ্রয়োজনের মানুষেরে । সে মানুষ, হে ধরণী, তোমার আশ্রয় ছেড়ে যাবে যবে, নিয়ো তুমি গণি যা-কিছু দিয়েছ তারে, তোমার কর্মীর যত সাজ, তোমার পথের যে পাথেয়, তাহে সে পাবে না লাজ ; রিক্ততায় দৈন্য নহে। তবু জেনে অবজ্ঞা করি নি তোমার মাটির দান, আমি সে মাটির কাছে ঋণী – জানায়েছি বারংবার, তাহারি বেড়ার প্রান্ত হতে অমূর্তের পেয়েছি সন্ধান। যবে আলোতে আলোতে লীন হত জড়যবনিকা, পুষ্পে পুষ্পে তৃণে তৃণে রূপে রসে সেই ক্ষণে যে গৃঢ় রহস্য দিনে দিনে হত নিঃশ্বসিত, আজি মর্তের অপর তীরে বুঝি চলিতে ফিরামু মুখ তাহারি চরম অর্থ খুজি । যবে শাস্ত নিরাসক্ত গিয়েছি তোমার নিমন্ত্রণে তোমার অমরাবতী স্ব প্রসন্ন সেই শুভক্ষণে