পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দাদা, আমার সঙ্গে তুমি নৌকোত কোরো না। আজ থেকে তুমি আমার দাদা, আমি তোমার ছোটো ভাই ঘেটু। . . . বাহুদ্বারা ইন্দ্রের গলবেষ্টন এবং ইন্দ্রকর্তৃক অব্যক্ত কাতরধ্বনি উচ্চারণ শীতলা । ( চন্দ্রের প্রতি) তুমি যাও কোথায়? · , “ . . চন্দ্র । মনোজে, অদ্য অস্তঃপুরে দেবীগণ ভর্তৃপ্রসাদন-ত্রতে র্তাহাদের এই সেবকাধমকে স্মরণ করিয়াছেন, অতএব যদি অনুমতি হয় তবে, হে হরিণশালীননয়নে— শীতলা। কী বললে ? শালী ? তা, ভাই, তাই সই। তোমার চাদমুখে সবই মিষ্টি লাগে । তা, শালী যদি বললে তবে কানমলাটিও খাও । , # . [ চন্দ্রের পাশ্বে একাসনে বসিয়া চন্দ্রের কর্ণপীড়ন ইন্দ্র। ( চন্দ্রের প্রতি ) ভগবন সিতকিরণমালিন, তুমিই ধন্য। করুণম্পর্শে তরুণীকরকিসলয়ের অরুণরাগ এখনো তোমার কর্ণমূলে সংলগ্ন হইয়া আছে। শীতলা। (মনসার প্রতি লক্ষ করিয়া স্বগত) ম'লো ম’লো! আমাদের মনসে হিংসেয় ফেটে ম'লো। আমি চাদের পাশে বসেছি, এ আর ওঁর গায়ে সইল न । ঘুরঘুর করে বেড়াচ্ছে দেখে-না। এতগুলো পুরুষ-মানুষের সামনে লজ্জাও নেই! মাগী এবার পাড়ায় গিয়ে কত কানাযুষোই করবে ! উনিও বড়ো কম্বর করেন নি। কার্তিক-ঠাকুরটিকে নিয়ে যেরকম নিলজপনা করেছে আমি দেখে লজ্জায় মরে যাই আর-কি। কার্তিক কোথায় কুকোবে ভেবে পায় না। ওই তো চেহারা, ওই নিয়ে এত ভঙ্গিও করে । মাগো, মাগো, মাগো ! ( প্রকাশ্বে ) আ মর মাগী ! চাদের সামনে দিয়ে অমন বেহায়ার মতো আনাগোনা করছিস কেন ? যেন সাপ পেলিয়ে বেড়াচ্ছে! কীর্তিকের ওখানে ঠাই হল না নাকি? । 場 • [স্বরসভার মধ্যে মনসার ও শীতলার গ্রাম্য ভাষায় তুমুল কলহ ইন্দ্র। ( শশব্যস্ত হইয়া একবার মনসা ও একবার শীতলার প্রতি ) ক্রোধ সম্বরণ করে ! ক্রোধ সম্বরণ করো ! অয়ি অস্থয়াতাম্রলোচনে, অয়ি গলদবেণীবন্ধে, অয়ি বিগলিততুকুলবসনে, অয়ি কোকিলজিতকুজিতে, তারতর সপ্তম স্বরকে পঞ্চম স্বরে নম্র করিয়া আনে। অগ্নি কোপনে— . . . . . * ঘেটু। (উত্তরীয় ধরিয়া ইন্দ্রকে আসনে বসাইয়া) তুমি এত ব্যস্ত হও কেন দাদা? ওদের এমন রোজ হয়ে থাকে। থাকত ওলাবিবি, তা হলে আরও জমত। তার কি খাবার গোল হয়েছে তাই সে শচীর সঙ্গে ঝগড়া করতে গেছে। ইন্দ্র। (ব্যাকুলভাবে) হা স্বরেক্সবক্ষোবিহারিণী দেবী পৌলমী ! . . . . . মনসার দ্রুতবেগে সভাত্যাগ এবং শীতলার পুনশ্চ চন্দ্রের পার্থে উপবেশন