খনা [ ७२ ] খন তাহা অবলীলাক্রমে বলিয়া দিতে পারিতেন । বরাহ রাজসভার জ্যোতিষী বলিয়া, অনেকে তাহার গৃহে গণনা করাইতে আসিতেন । বরাহ কোন গণনায় অসমর্থ হইলে অথবা অনায়াসে উত্তর করিতে না পরিলে, খনা ঘরের ভিতর হইতে তাহা বলিয়া দিতেন। খনার নাম চতুর্দিকে প্রচার হইয়া বরাহের যশঃ ক্রমে হীনপ্রভ হইতে লাগিল । কথিত আছে যে এই কারণে খনার প্রতি বরাহের দ্বেষ উপস্থিত হয়। কিংবদন্তী অাছে যে একদা বিক্রমাদিত্য সভাপণ্ডিতদিগকে আকাশের নক্ষত্রসংখ্যা গণনা করিয়া দিতে বলেন । কেহই তাহাতে কৃতকাৰ্য্য হইলেন না। বরাহ পর দিবস নক্ষত্রসংখ্যা গণিয়া দিবেন বলিয়া অঙ্গীকার করিলেন । কিন্তু তাহা না পারিয়া দুঃখিত হইয়া গৃহে শয়ন করিয়া রহিলেন । রজনীতে রন্ধনান্তে খনা শ্বশুরকে ভোজন করিতে আহবান করিলে, বরাহ নক্ষত্র গণনা পর দিবস রাজসভায় বরাহ নক্ষত্রংখ্যা বলিলে, রাজা তাহাকে নক্ষত্র গণনার সঙ্কেত কোথায় পাইলেন তাহা জিজ্ঞাসা করেন। তিনি বলিতে বাধ্য হইলেন যে তাহার পুত্রবধু খনা বলিয়া দিয়াছেন। এরূপ বিদুষী নারীকে পুরস্কার দিবার জন্ত রাজা তাহাকে সভায় আনিতে আদেশ করেন। কুলবধূকে রাজসভায় উপস্থিত করায় দুৰ্ব্বিসহ অপমানের ভয়ে, বরাহ মিহিরকে খনার জিহবাচ্ছেদন করিতে আদেশ করেন। নির্দোষী স্ত্রীর প্রতি সেই গৰ্হিত আদেশ পালনে পরাজু খ হইয়া, মিহির অতি ম্ৰিয়মাণ হইলেন। খনা নিজ মৃত্যুর সময়ও উপায় গণনা দ্বারা অগ্রে জানিতে পারিয়া, স্বামীকে পিতার আজ্ঞা পালনে অনুরোধ করেন। জিহব। চ্ছেদিত হইলে খনার মৃত্যু হয়। গণনা সম্বন্ধে খনার অনেক বচন বঙ্গভাষায় প্রচলিত আছে। কয়েকটা বচন নিম্নে উদ্ধৃত করা গেল— স্থির না করিয়া জল গ্রহণ করিতে s কিসের তিথি কিসের বার, অস্বীকৃত হইলেন। তখন খনা জন্ম নক্ষত্র কর সার ; মাটীতে কয়েকটা অঙ্ক পাতিয়া নক্ষত্র- কি কর শ্বশুর মতিহীম, ংখ্যা বলিয়া তাহাকে আহার পলকে জীবন বার দীন । করিতে আহবান করেন— অক্ষর দ্বিগুণ চেগুণ মাত্র', নামে নামে করি সমতা ; * এক শ ন্যে মরে পতি, ( সাত সাত জারও সাত, সাতে দিয়া ভরা ; ছয়ে মরে ঘর যুবতী f ভাত খাওসে স্বশুরঠাকুর আকাশে এত তার । , (নবনারী, খনার বচন )