বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
১১
শিরোনাম সূত্র তারিখ
এখনই ভারতের স্বীকৃতি বাংলাদেশের স্বার্থের অনুকূল হবে না—বিরোধী নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ‘দৈনিক আনন্দবাজার’ ৮ মে, ১৯৭১

এখনই ভারতের স্বীকৃতি বাংলাদেশের স্বার্থের অনুকূল হবে না—

তবে মুক্তি আন্দোলনকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়া হবে

—শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী

(বিশেষ সংবাদদাতা)

 নয়াদিল্লী, ৭মে—আজ সকালে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী বৈঠকে বসেছিলেন। প্রায় সকলেই বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান। (ব্যতিক্রম: বিকানীরের মহারাজা ডঃ করণ সিং এবং মুসলিম লীগ নেতা মহম্মদ ইসমাইল। দুজনের বক্তব্যে অবশ্য কিছু পার্থক্য ছিল।) সকলের কথা শোনার পর প্রধানমন্ত্রী যা বলেন তার মর্ম এইরকম: বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলনের প্রতি ভারত পূর্ণ সমর্থন জানাবে কিন্তু বাংলাদেশকে এখনই কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেওয়া এই দেশেরই স্বার্থের পরিপন্থী হবে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশের জনগনের প্রতি প্রচুর সহানুভুতি থাকলেও স্বীকৃতির ব্যাপারে ভাবনা-চিন্তা চলছে। তবে তাজুদ্দিন সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না এমন কথা তিনি বলেননি বা সরকার এ ব্যাপারে ঠিক কী করবেন তার কোন আভাস দেননি। শুধু স্পষ্টভাবে তিনি বলেন যে, কোন অবস্থাতেই ভারত ভীত নয়।

ভারতের স্বীকৃতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী

 ইন্দিরাজী বলেন যে, পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে নানা উসকানিকমূলক কাজ করছে। ভারতকে নানাভাবে বাংলাদেশের ব্যাপারে জড়াতে চাইছে। যাই হোক, ভারত যা ঠিক মনে করবে তা করতে ভীত নয়।

 দুই ব্যতিক্রম। অবিলম্বে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের দাবির বিরোধিতা করেন বিকানীরের মহারাজা ডঃ করণ সিং। তিনি লোকসভায় কয়েকটি ছোট গোষ্ঠী ও কয়েকজন নির্দল সদস্যের নেতা। সেই গোষ্ঠী ও ব্যক্তিরা অবশ্য আগেই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার দাবী জানিয়েছেন।

 ডঃ করণ সিং-এর বক্তব্য: বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলন আসলে বাঙালীদের বিদ্রোহী ভারতের এ ধরনের ব্যাপার ঘটলে সরকার কী করতেন? কাশ্মীরের কথাও ভাবা দরকার।

 ইন্দিরাজী তাঁকে বলেন: কাশ্মীরে যারা হাঙ্গামা বাধাতে চায় তারা জনসাধারণ থেকে বিচ্ছিন্ন। পক্ষান্তরে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামীদের পিছনে বিপুল গরিষ্ট সমর্থন রয়েছে। বাংলাদেশে গরিষ্ট অভিমত পাকিস্তান দাবিয়ে রাখতে চাইছে।

 মুসলিম লীগ নেতা মহম্মদ ইসমাইল যা বলেন তার মর্ম: এমন কিছু করা ঠিক হবে না যাতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে বা কোন সঙ্কট সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলে ওই ধরনের সঙ্কট দেখা দিতে পারে। তবে সরকার এ ব্যাপারে যে কোন ব্যবস্থাই নিন না কেন তার প্রতি তাঁহাদের দলের সমর্থন