পাতা:দুনিয়ার দেনা - হেমলতা দেবী.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
দুনিয়ার দেনা

পাওয়া হাড় চিবানোর শব্দ থেকে থেকে এক একবার শোনা যাচ্ছে। নিভানো চিতার শেষ আগুনের অস্পষ্ট রাঙা চিহ্ন ছাইয়ের গাদার ভিতর থেকে তখনও উঁকি দিচ্ছে।

 কিছুক্ষণ চেয়ে থাক্‌তে থাক্‌তে দেখা গেল চিতার ছাইগুলো কি সে যেন নাড়ছে উপর থেকে ছাইগুলো সরে যাওয়াতে তলার আগুন স্পষ্ট হয়ে বেরিয়ে পড়ল তখন দেখা গেল একজন মানুষ আগুনের উপর কতকগুলো কাঠ চাপাচ্ছে। খানিকক্ষণ ধুঁইয়ে কাঠ গুলো দপ্‌ করে জ্বলে উঠল। জ্বলন্ত আগুনের সামনে একজন কাপালিক দাঁড়িয়ে, গলায় জবা ফুলের মালা, কপালে মস্ত বড় রক্ত চন্দনের ফোঁটা, তার নীচে তিন সার রক্ত চন্দনের দাঁড়ি টানা; বুকের ঠিক্‌ মাঝখানটিতে সিঁদুর দিয়ে ত্রিকোণ চিহ্ন আঁকা; পরণে হলুদে ছোপান একখানা মোটা ধুতি তার উপর কোমরে লাল রঙের এক গামছা বাঁধা। সাধন ভজনের সরঞ্জামগুলি মাটিতে নামিয়ে রেখে আগুনে কাঠ দিয়ে কাপালিক আগুণটা আগে জ্বালিয়ে তুলছে।

 কাপালিকের বয়স খুব বেশী নয় আন্দাজ ছত্রিশ সায়ত্রিশ হবে। চেহারা দিব্য সুশ্রী, উজ্জ্বল গৌর রঙ, শরীরের গড়ন বলিষ্ঠ ও সুন্দর। কিন্তু উৎকট সাধনায় সমস্ত চেহারায় এখন যে একটি বিকট ভাব দেখা দিয়াছে