—টাকা নগদ দিয়েছিল?
—হ্যাঁ বাবু।
—সে টাকা তোমার কাছে আছে? নোট, না নগদ?
—নগদ। টাকা নেই বাবু, তাই নিয়ে মহাজনের ঘর থেকে সোনা কিনে এনে গহনা গড়ি!
—দু’ একটা টাকাও নেই?
—না বাবু।
—তোমার মহাজনের কাছে আছে?
—বাবু, রাণাঘাটের শীতল পোদ্দারের দোকানে কত সোনা কেনা-বেচা হচ্চে দিনে। আমার সে টাকা কি তারা বসিয়ে রেখেচে?
—শীতল পোদ্দার নাম? আমার সঙ্গে তুমি চলো রাণাঘাটে আজই।
বেলা তিনটের ট্রেনে মহীন্ সেকরাকে নিয়ে রাণাঘাটে শীতল পোদ্দারের দোকানে হাজির হোলাম। সঙ্গে মহীন্কে দেখে বুড়ো পোদ্দারমশায় ভাবলে, বড় খরিদ্দার একজন এনেচে মহীন্। তাদের আদর-অভ্যর্থনাকে উপেক্ষা ক’রে আমি আসল কাজের কথা পাড়লাম, একটু কড়া—রুক্ষস্বরে।
বল্লাম—সেদিন এই মহীন্ আপনাদের ঘর থেকে সোনা কিনেছিল, এগারো ভরি?
পোদ্দারের মুখ বিবর্ণ হয়ে উঠলো ভয়ে—ভাবলে, এ নিশ্চয়ই পুলিসের হাঙ্গামা! সে ভয়ে-ভয়ে বল্লে—হ্যাঁ বাবু, কিনেছিল।
—টাকা নগদ দেয়?
—তা দিয়েছিল।
—সে টাকা আছে?
—না বাবু, টাকা কখনো থাকে? আমাদের বড় কারবার, কোথাকার টাকা কোথায় গিয়েচে!
আমিও ওকে ভয় দেখানোর জন্যে কড়া সুরে বল্লাম—ঠিক কথা বলো। টাকা যদি থাকে আনিয়ে দাও—তোমার ভয় নেই। চুরির ব্যাপারে নয়, মহীনের কোনো দোষ নেই। তোমাদের কোনো পুলিসের হাঙ্গামায় পড়তে হবে না—কেবল কোর্টে সাক্ষী দিতে হতে পারে। টাকা বার করো।
মহীন্ও বললে—পোদ্দারমশায়, আমাদের কোনো ভয় নেই, বাবু বলেচেন। টাকা যদি থাকে, দেখান বাবুকে।
পোদ্দার বল্লে—কিন্তু বাবু, একটা কথা। টাকা তো সব সমান, টাকার গায়ে কি নাম লেখা আছে?
—সে-কথায় তোমার দরকার নেই। নাম লেখা থাক্ না থাক্—টাকা তুমি বার করো।