পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্ৰবন্ধ و\ )S “নির্দিষ্ট সময়ে সেনাদিগের বেতনাদি প্রদানে ত বিমুখ হয়েন না ? তাহা হই সুচারুরূপে কাৰ্য্য নির্বাহ হওয়া দূরে থাকুক, প্ৰত্যুত তাহাদিগের দ্বারা পদে পদে আনি ঘটনা ও বিদ্রোহের সম্পূর্ণ সম্ভাবনা হইয়া উঠে।” এই নীতির বিপরীতাচরণ কার্থেজ রাজ্য লোপের মূল। একা রোম কার্থেজ ধ্বংস করে নাই। - “সংকুলজাত প্ৰধান প্ৰধান লোক ত তোমার প্রতি অনুরক্ত রহিয়াছে ? তাহারা ত তোমার নিমিত্ত রণক্ষেত্ৰে প্ৰাণ পরিত্যাগ করিতেও সম্মত আছে ?” এই নীতির অবজ্ঞায় ষ্টয়ার্ট বংশ নষ্ট হয়েন। ভারতবর্ষীয় ইংরেজ রাজপুরুষের। ইহা বিলক্ষণ বুঝেন। বুঝিয়া, কর্ণওয়ালিস চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করিয়াছিলেন ও কানিং ভারতীয় রাজগণকে পোষ্যপুত্ৰ লইতে অনুমতি দিয়াছেন। লর্ড লিটন আর কিছু করিতে না পারিয়া উপাধি বিতরণ করিয়াছেন। পরে নারদ পেনশ্যন দেওয়ার পরামর্শ দিতেছেন, “মহারাজ । যাহারা কেবল আপনার উপকারের নিমিত্ত কালকবলে নিপতিত ও যৎপরোনাস্তি দুৰ্দশাগ্ৰস্ত হইয়াছে, তাহাদিগের পুত্র কলাত্র প্রভৃতিকে ত ভরণ পোষণ করিতেছেন ?” ক্ষিপ্ৰকারিতার বিষয়ে “শক্রিকে ব্যসনাসক্ত দেখিয়া স্বীয় মন্ত্র, কোষ ও ভৃত্য, ত্ৰিবিধ বল সম্যক বিবেচনা করিয়া, অবিলম্বে তাহাকে ত আক্রমণ করেন ?” অতি প্রধান রােজ্যাধ্যক্ষেরা এ তত্ত্ব সম্যক বুঝিয়াছিলেন। “অবিলম্বে” কাহাকে বলে, প্রথম নাপোলিয়ন বুঝিতেন। তঁহার রণজয় সেই বুদ্ধির ফল। তৃতীয় নাপোলিয়ন "অবিলম্বে” প্রাসীয়দিগকে আক্রমণ করিতে গিয়াছিলেন বটে, কিন্তু প্ৰথম নাপোলিয়নের মত “মন্ত্র, কোষ ও ভৃত্য” ত্ৰিবিধ বলের সম্যক বিচার না করিয়াই আক্রমণ করিয়াছিলেন। তিনি নারদ বাক্যে অবহেলা করিয়া নষ্ট হইলেন । পরে সমাদৃষ্টি পক্ষে,- "যেমন পিতা মাতা সকল সন্তানকে সমান স্নেহ করেন, তদ্রুপ আপনি তা সমাদৃষ্টিতে সমুদ্রমেখলা সমুদয় পৃথিবী অবলোকন করিতেছেন ?” ইংরেজেরা ভারতবর্ষে এই নারদীয় বাক; মনোযোগপূর্বক অধ্যয়ন করুন। নিম্নলিখিত কথাটি বিস্মার্কের যোগ্য -