স্পিক্কে পাঠাইয়া দিলেন; স্পিক্ আসিয়া ক্লাইবকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কাহার আজ্ঞায় দুর্গাধিকার করিয়াছ?” ক্লাইব বলিলেন যে, তিনিই প্রধান সেনাপতি, সুতরাং দুর্গাধিকারে তাঁহারই একমাত্র ক্ষমতা,—ওয়াট্সনের কোন ক্ষমতা নাই। এই সংবাদে ওয়াট্সন্ বলিয়া পাঠাইলেন যে, ক্লাইব সহজে দুর্গাধিকার পরিত্যাগ না করিলে তাঁহাকে কামানের গোলায় উড়াইয়া দিব”;—ক্লাইব বলিলেন, “তথাস্তু; কিন্তু এই আত্মকলহের জন্য ওয়াট্সন্ দায়ী!” অবশেষে কাপ্তান লাথাম ও স্বয়ং ওয়াট্সন ও দুর্গমূলে শুভাগমন করিলেন, এবং অনেক তর্ক বিতর্কের পর উভয়পক্ষে সন্ধি হইয়া ক্লাইবের হস্তেই দুর্গাধিকার সমর্পিত হইল।[১] পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক দুর্গজয়ের কাহিনী লিখিত রহিয়াছে; কিন্তু এরূপ গৃহকলহের দৃষ্টান্ত বোধ হয় অল্পই দেখিতে পাওয়া যায়।
উভয়দলের মনোমালিন্য দূর করিবার জন্য ড্রেক সাহেবকে কলিকাতার শাসনভার প্রদান করা হইল; তিনি পুনরায় কলিকাতার কর্ত্তা হইয়া সগৌরবে আসনগ্রহণ করিলেন।
ইংরাজেরা দুর্গপ্রবেশ করিয়া দেখিতে পাইলেন যে, দুর্গমধ্যে কোম্পানীর অধিকাংশ দ্রব্যজাত যেরূপ অবস্থায় রাখিয়া গিয়াছিলেন, তাহা সেইরূপ ভাবেই পড়িয়া রহিয়াছে,—কিছুই অপহৃত বা বিলুণ্ঠিত হয় নাই।[২] দুর্গপ্রাচীরের বাহিরে যে সকল বাড়ীঘর ছিল, তাহাই কেবল সিপাহীরা লুটিয়া লইয়া গিয়াছে।