বুঝিতে পারিয়াছিলেন। তিনি আর শত্রুসঙ্কুল মুরশিদাবাদে কালক্ষয় না করিয়া সিরাজের সহিত মিলিত হইবার জন্য ভগবানগোলায় গমন করিতেছিলেন। কিন্তু ভগবানগোলায় উপনীত হইবার পূর্ব্বেই মীরজাফরের অনুচরবর্গ তাঁহাকে কারারুদ্ধ করিয়া ফেলিল।[১] যিনি নিয়ূত ছায়ার ন্যায় সিরাজদ্দৌলার পদানুসরণ করিয়া, কখন মন্ত্রণাকৌশলে কখন বা অপরাজিত বাহুবলে মোগলের সিংহাসনরক্ষার জন্য জীবন উৎসর্গ করিয়া দিয়াছিলেন, যাঁহার অতুলনীয় রণকৌশল এবং অকৃত্রিম প্রভুভক্তির পরিচয় পাইয়া বিদ্রোহী দল সর্ব্বদা সশঙ্কচিত্তে কালযাপন করিত, তাঁহাকে মীরজাফর নিষ্কৃতিদান করিতে সাহস পাইলেন না। তিনি মোহনলালকে বিদ্রোহী সেনানায়ক মহারাজ রায়দুর্ল্লভের হস্তে সমর্পণ করিলেন। মোহনলালকে দীর্ঘকাল কারাক্লেশ বহন করিতে হইল না; রায়দুর্ল্লভ তাঁহার ধন সম্পদ ও জীবন হরণ করিয়া মীরজাফরের আশঙ্কা নিবারণ করিলেন।[২]
রাজধানী শত্রুশূন্য হইল; তথাপি মীরজাফর মস্নদে উপবেশন করিতে সাহস পাইলেন না। সকলে বুঝিল যে অতঃপর তিনিই বাঙ্গালা, বিহার উড়িষ্যার শূন্য সিংহাসন উজ্জ্বল করিবেন; তথাপি মীরজাফর সেই শূন্য সিংহাসন সম্মুখে করিয়া ক্লাইবের শুভাগমনের জন্য অপেক্ষা করিতে লাগিলেন। ক্লাইব সহসা রাজধানীতে পদার্পণ না করিয়া নগরোপকণ্ঠে কালযাপন করিতেছিলেন; ২৯ জুন দুইশত গোরা এবং পাঁচশত কালা