আস্রফি আমার হইয়া বলিল- হা-হুজুর তোমায় দিচ্ছেন। খানা এখন দু-বছর মাপ। তীস্ সাল থেকে খাজনা দিও। কেমন, বাজি?
কুন্তা লজ্জাজড়িত মুখে আমার দিকে চাহিয়া বলিল-~-জী মঞ্জুর মেহেরবান। পরে হঠাৎ বিহ্বলার মত কঁদিয়া ফেলিল।
আমার ইঙ্গিতে আফি তাহাকে লইয়া চলিয়া গেল।
সন্ধ্যার পরে লবটুলিয়ার নূতন বস্তিগুলি দেখিতে বেশ দেখায়। কুয়াসা হইতেছে বলিয়া জ্যোৎস্না একটু অস্পষ্ট, বিস্তীর্ণ প্রান্তরব্যাপী কৃষিক্ষেত্র, দূরে দূরে দু-পাঁচটা আলো জ্বলিতেছে বিভিন্ন বস্তিতে। কত লোফ, কত পরিবার অল্পের সংস্থান করিতে আসিয়াছে আমাদের মহালে—বন কাটিয়া গ্রাম বসাইয়াছে, চাষ আরঞ্চ। করিয়াছে। আমি সব বস্তির নামও জানি না, সকলকে চিনিও না। কুয়াসাত। জ্যোৎস্নালোকে এখানে ওখানে দূরে নিকটে চুড়ানো বঞ্চিগুলি কেমন রহস্যময় দেখাইতেছে যেসব লোক এই সব বস্তিতে বাস করে, তাহাদেয় জীবনও আমায় কাছে এই কুয়াশাচ্ছন্ন জ্যোৎস্নাময়ী রাত্রির মতই রহস্যাবৃত। ইহাদের কাহারও কাহারও সঙ্গে আলাপ করিয়া দেখিয়াছি-জীবন সম্বন্ধে ইহাদের দৃষ্টিভঙ্গী, ইহাদের জীবনযাত্রা-প্রণাী আমার বড় অদ্ভুত লাগে।
প্রথম ধরা যাক ইহাদের খাদ্যের কথা। আমাদের মহালের জমিতে বছরে তিনটি খাদ্যশস্য জন্মায়—ভাদ্র মাসে মকাই, পৌষ মাসে কড়াই এবং বৈশাখ মাসে গম। মকাই খুব বেশী হয় না, কারণ ইহার উপযুক্ত জমি বেশী নাই। কলাই ও গম যথেষ্ট উৎপন্ন হয়, কলাই বেশী, গম তাহার অর্ধেক। সুতরাং লোকের প্রধান খাদ্য কলাইয়ের ছাতু।
ধান একেবারেই হয় না-ধানের উপযুক্ত নাবাল জমি নাই। এ অঞ্চলের