তারানাথ তান্ত্রিকের গল্প সন্ধ্যা হইবার দেরি নাই। রাস্তায় পরনো বইয়ের দোকানে বই দেখিয়া বেড়াইতেছি, এমন সময়ে আমার এক বন্ধ কিশোরী সেন আসিয়া বলিল, এই যে, এখানে কি ? চল চল জ্যোতিষীকে হাত দেখিয়ে আসি, তারানাথ জ্যোতিষীর নাম শোন নি ? মন্ত বড় গণী । হাত দেখানোর ঝোঁক চিরকাল আছে । সত্যিকার ভালো জ্যোতিষী কখনও দেখি নাই। জিজ্ঞাসা করিলাম-বড় জ্যোতিষী মানে কী ? যা বলে তা সত্যি হয় ? আমার অতীত ও বািন্তমান বলতে পারে ? ভবিষ্যতের কথা বললে বিশবাস হয় না । বন্ধ বলিল-চলই না। পকেটে টাকা আছে ? দ’টাকা নেবে, তোমার হাত দেখিও । দেখি না বলতে পারে কি না। কাছেই একটা গলির মধ্যে একতলা বাড়ির গায়ে টিনের সাইনবোডে লেখা আছে তারানাথ জ্যোতিবিনোদSumitaBot (আলাপ) ১২:০৭, ২৬ জুলাই ২০১৭ (ইউটিসি) এইখানে হাত দেখা ও কোঠী বিচার করা হয় । গ্রহশান্তির কবচ তন্ত্রোক্ত মতে প্রস্তুত করি । আসন, দেখিয়া বিচার করান। বড় বড় রাজা-মহারাজার প্রশংসাপত্ৰ আছে। দশনী নামমাত্ৰ । বন্ধ বলিল – এই বাড়ি । হাসিয়া বলিলাম।--লোকটা বোগাস । এত রাজা মহারাজা যার ভক্ত তার এই বাড়ী ? বাহিরের দরজার কড়া নাড়িতেই ভিতর হইতে একটি ছেলে বলিয়া উঠিল 一び ? কিশোরী জিজ্ঞাসা করিল-জ্যোতিষী-মশায় বাড়ী আছেন ? ভিতর হইতে খানিকক্ষণ কোন উত্তর শোনা গেল না । তারপর দরজা খালিয়া গেল, একটা ছোট ছেলে উকি মারিয়া আমাদের দিকে সন্দিগ্ধ চোখে খানিকক্ষণ চাহিয়া দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিল-কোথা থেকে আসছেন ? আমাদের আসিবার উদ্দেশ্য সে “শনিয়া আবার বাড়ীর ভিতর চলিয়া গেল। কিছুক্ষণ কাহারও কোন সাড়া-শব্দ পাওয়া গেল না। আমি বলিলাম-ব্যাপার যা দেখছি, তোমার জ্যোতিষী পাওনাদারের ভয়ে দিনরাত দরজা বন্ধ ক’রে রাখে। ছেলেটাকে পাঠিয়ে দিয়েছে আমরা পাওনাদার কি না দেখতে, এবার ডেকে নিয়ে যাবে। আমার কথা ঠিক হইল । একটি পরে ছেলেটি দরজা খালিয়া বলিল-আসন ভিতরে । ছোট একটি ঘরে তত্ত্বপোশের উপর আমরা বসিলাম । একটি পরে ভিতরের দরজা ঠেলিয়া একজন বন্ধ প্রবেশ করিল। কিশোরী উঠিয়া দাঁড়াইয়া হাতজোড় করিয়া প্ৰণাম করিয়া বলিল-পশিডত মশায় আসন। বন্ধের বয়স ষাট-বাষট্টির বেশি হইবে না। রং টকটকে গৌরবণ, এ বয়সেও গায়ের রঙের জলস আছে । মাথার, চুল প্রায় সব উঠিয়া গিয়াছে।