পাতা:সার্বজনীন - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সর্বজনীন SS3 ৪ কিন্তু এখনো শোধরায় না কেন ? এ প্রশ্ন সকলেরই মনে জাগে। এখন তো সে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে এ পথে কত সুখ ? বাড়ীতে গেলে আত্মীয়বন্ধু দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। বন্দ উপায়ে কোনরকমে দু’টো পয়সা হাতে এলে বদ খেয়ালে দু’দিনে তা উড়ে যায়। আবার সম্বল করতে হয় রাস্তা, আবার ফিকিরে ঘুরতে হয় কি করে দু’টো পয়সা আসবে। এত কষ্ট পায়, তবু নিজেকে সংশোধন করে না কেন ? পরমেশ্বর বলে, কষ্ট পাওয়াটাই নেশা দাড়িয়ে গেছে, উগ্ৰ নেশা । এ রকম অস্বাভাবিক জীবন ছাড়া ওর সব ফাকা মনে হয়। সুরমা বলে, মরলেও তো বঁচা যেত ! অনায়াসে আজ সে নিজের স্বামীর মরণ কামনা করে ! সুরমার জন্য জ্বালা আর সাধনের জন্য দুশ্চিন্তা ও হতাশ । সমীরের সঙ্গে মােটা টাকা নিয়ে ব্যবসায়ে নেমে নয় সমীরের জন্য সর্বনাশ হয়েছিল। তারপর নিজেও তো কতদিকে কতভাবে চেষ্টা করল, ফল হল না কিছুই। নিজের খরচটা চালাবার জন্য সামান্য বেতনের একটা চাকরীও জোটে না । মন ভেঙ্গে যাবার বিপদ দেখা দিয়েছে সাধনের । সবিতার মত একটা অসহায়া মেয়ে পৰ্য্যন্ত বাইরে থেকে চাল এনে বেচে আর মাঝে মাঝে কোন সভায় গান গেয়ে কিছু কিছু রোজগার করে, আর পুরুষ মানুষ সে বাপের ঘাড় ভেঙ্গে পেট ভরায়। সবিতা তাকে সাহস দেয়, তার হতাশা দূর করার চেষ্টা করে। নিজের রোজগারের কঠোর বাস্তবতা নিয়ে খেদও সে প্ৰকাশ করে। সাধনের কাছেই।