পাতা:অভিযাত্রিক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

载令 অভিযান্ত্রিক জানেন । ঝালকাঠিতে এসে এখানকার বাড়িঘর দেখে মন এমন দামে গেল-এতটুকু সৌন্দর্যবোধ থাকলে কেউ এ ধরনের বাড়ি করে না। এত বড় গঞ্জ, কিন্তু এখানে প্রায় সব বাড়িই করোগেট টিনের-কি। ব্যবসা বাণিজ্যের গুদামঘর, কি গৃহস্থবাডি। ফলে দোকান, গুদাম ও ভদ্রাসন বাডির একই মূর্তি। তারপরে অবিশিষ্ঠ লক্ষ্য করেচি পূর্ববঙ্গের প্রায় সর্বত্রই এই টিনের ছাউনির চলন হয়েচে আজকাল । খড়ের ঘরের যে শাস্ত শ্রী আছে, টিনের ঘরের তা নেই, বরং টিনের চেয়ে লাল টালির ঘরাও অনেক ভালো দেখতে। ঝালকাঠিতে বেশ অবস্থাপন্ন গৃহস্থের বাডিও দেখোঁচি টিনের ছাউনি । বাড়ির সামনে এক-আধটু ফুলের বাগান কি সুদৃশ্য দু-একটা গাছপালাও কেউ সখা করে করেনি । টিনের ঘরের পাশে তা থাকলেও অন্তত বাড়ির কর্কশ রুক্ষতা একটু দূর হয়-কিন্তু ফুলের বালাই নেই কোনো বাড়িতে। এক জায়গায় কেবল আছে দেখেছিলুম, তাও কলকাতার টানে । নদীর ধারে ভূকৈলাসের জমিদারদের প্রকাগু কাছারিবাড়ি আছেখুব বড় বড় থামওয়ালা সেনেট হাউসের মত চওড়া ধা পাওয়ালা বাডিএই টিনের ঘরের রাজ্যে এ বাডিখানা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। ঝালকাঠি আমার ভালো লেগেছিল। অন্য দিক থেকে । আমাদের গ্রামে নেপাল মাঝি বলে একজন লোক ছিল আমার ছেলেবেলায়, সে অত্যন্ত সামান্য অবস্থা থেকে ব্যবসা করে হাতে বিলক্ষণ দুপিয়সা করেছিল । তার মুখে ঝালকাঠির কথা খুব শুনতাম । নেপাল মাঝি একবার ঝালকাঠি বন্দরে নৌকো লাগিয়েছিল, তখন সে অপরের নৌকোতে মাঝিগিরি করতো।-সে সময় বন্দরে আগুন লাগে। একজন লোক একটা কাঠের হাতবাক্স নিয়ে জলন্ত ঘর থেকে বেরিয়ে এসে ওকে বলে-মাঝি, বাক্সটা ধরে রাখে। তেী-আমি আসচি