আলুথালু, হায়, এবে কবরীবন্ধন!
আভরণ হীন দেহ, হিমানীতে যথা
কুসুমরতন হীন বনসুশোভিনী
লতা! অশ্রুময় আঁখি, নিশার শিশির
পূর্ণ পদ্মপর্ণ যেন! বীরবাহু শোকে
বিবশা রাজমহিষী, বিহঙ্গিনী যথা,
যবে গ্রাসে কালফণী কুলায়ে পশিয়া
শাবক। শোকের ঝড় বহিল সভায়!
সুর সুন্দরীর রূপে শোভিল চৌদিকে
বামাকুল; মুক্তকেশ মেঘমালা, ঘন
নিশ্বাস প্রলয় বায়ু; অশ্রুবারি ধারা
আসার; জীমূতমন্দ্র হাহাকার রব!
চমকিলা লঙ্কাপতি কনক আসনে।
ফেলিল চামর দূরে তিতি নেত্রনীরে
কিঙ্করী; কাঁদিল ফেলি ছত্র ছত্রধর;
ক্ষোভে, রোষে, দৌবারিক নিষ্কোষিলা অসি
ভীমরূপী; পাত্র, মিত্র, সভাসদ যত,
অধীর, কাঁদিলা সবে ঘোর কোলাহলে।
কতক্ষণে মৃদুস্বরে কহিলা মহিষী
চিত্রাঙ্গদা, চাহি সতী রাবণের পানে;—
“একটী রতন মোরে দিয়েছিলে বিধি
কৃপাময়; দীন আমি থুয়েছিনু তারে
রক্ষাহেতু তব কাছে, রক্ষঃকুলমণি,
তরুর কোটরে রাখে শাবক যেমতি
পাখী। কহ, কোথা তুমি রেখেছ তাহারে,
লঙ্কানাথ? কোথা মম অমূল্যরতন?
পাতা:মেঘনাদবধ কাব্য.pdf/১৬
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
মেঘনাদবধ কাব্য।
৩২৫—৩৫০