এই বলিয়া হার্বি সেক্হ্যাণ্ড করিয়া চলিয়া গেলেন।
এক মাস, দুই মাস করিয়া ক্রমে জলের মত আট মাস কাটিয়া গেল। পরীক্ষার সময় আসিল, ক্রমে তাহাও শেষ হইল। এই কয় মাসের মধ্যে প্রতি সপ্তাহে হার্বির পত্র পাইতাম। প্রতি পত্রে তাহার সহিত দেখা করিবার অনুরোধ আসিত; প্রতি প্রত্যুত্তরে যথা সময়ে অনুরোধ রক্ষা করিবার মানস জানাইতাম। শেষ পত্রে হার্বি লিখিল “সোমবার বৈকালে ৪ টার ট্রেণে এখানে আসিবে, আমি গাড়ি লইয়া ষ্টেশনে অপেক্ষা করিব। এখানে তোমাকে পনর দিন থাকিতে হইবে, ইহার কম ছাড়িয়া দিব না।”
সোমবার বৈকালে একটি পোর্টমেণ্টো গুছাইয়া গাড়িতে উঠিলাম। হার্বির বাড়ী যাইতে যে ষ্টেশনে নামিতে হয়, তাহা লণ্ডন হইতে প্রায় পনর ক্রোশ দূরে। যথা সময়ে সেই ষ্টেশনে আসিয়া পঁহুছিলাম। হার্বি সেইখানে অপেক্ষা করিতেছিল। আমাকে দেখিয়া বিস্তর আহ্লাদ প্রকাশ করিল। দুইজনে তাহার গাড়িতে চড়িয়া চলিলাম।
কিছুদূর হইতে নিজের বাটী দেখিতে পাইয়া হার্বি বলিল “ঐ আমার বাড়ী দেখা যাইতেছে, ঐ যে বাগানের চতুর্দ্দিকের বাটীগুলি দেখিতেছ এসব আমার বন্ধুদের বাটী।” আমার বাড়ী থেকে সকলকার বাড়ীতে টেলিগ্রাফের তার বসাইয়াছি। যে দিন আমার কোন বিশেষ কাজ থাকে না, একজনকে টেলিগ্রাফ করি, আমার সহিত দাবা থেলিবেত শীঘ্র আইস—না হয় ত অপরকে বলি—সময় থাকেত চল শীকার করিতে যাই।”
কথা কহিতে কহিতে ফটকের কাছে আাসিয়া পঁহুছিলাম। হার্বি গাড়ি থামাইল। ফটক বন্দ ছিল কিন্তু খুলিবার জন্য গাড়ি হইতে নামিবার উপক্রম করাতে, হার্বি আমাকে স্থির হইয়া বসিতে বলিল।
ফটক আপনি খুলিয়া গেল। আমি আশ্চর্য্য হইয়া বলিলাম “বাঃ! ভারি মজাত! গেট আপনি খুলিয়া যায়।”
হাসিয়া হার্বি বলিল “কেন? বুঝিতে পারিলে না? গেটের দশ হাত এদিকে রাস্তায় একখানি লোহার পাত আছে, গাড়ি তাহার উপরে আসিতেই সেটা একটু নামিয়া গেল; এই লোহার পাতের আর ফটকের আংটার সঙ্গে মাটির নিচে দিয়া একটি লোহার শিক আছে। লোহার পাত নামিয়া যাওয়াতে ঐ শিক ফটকের আংটাকে ছাড়িয়া দিল; ফটকে স্প্রীং আছে, উহা আপনি খুলিয়া গেল। ভিতর দিকে ঠিক্ এই রকম আর একটা লোহার পাত আছে তাহার উপর দিয়া যখন গাড়ি যাইবে, ঠিক এইরূপে ফটক আপনি বন্ধ হইবে।”