পাতা:বিদ্যাসাগর জননী ভগবতী দেবী.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পরিচিতি

 পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যুগে যুগে মহামানবদের উদ্ভব হয়েছে। এইসব বন্দিত ব্যক্তিদের কীর্তিকাহিনী সমগ্র মানব জাতিকে চিরধন্য করেছে—পথের নিশানা দিয়েছে। এইসব ব্যক্তিদের অলৌকিক জীবনের কার্যাবলীর পিছনে রয়েছে, তাঁদের জননীদের প্রভাব ও প্রতিপত্তি। দুঃখের বিষয় এইসব বরনারী —মহীয়সী মহিলাদের জীবনালেখ্য উপেক্ষিত হয়ে আছে। সন্তানদের উপর জননীর সংগঠনকার্য কি ভাবে পরিচালিত হয়েছিল সেইসব তথ্য যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ হয়নি।

 পঞ্চদশ শতকে ‘বাঙালীর হিয়া অমিয় মথিয়া’ নিমাই কায়া ধারণ করেছিলেন। জগতে তিনি শচীনন্দন নিমাই—শচীদেবীর পুত্র মানব পরিত্রাতা শ্রীচৈতন্যদেব (১৪৮৬-১৫৩৩)। একমাত্র তাঁর জীবনীর মধ্যে মাতা শচীদেবীর কাহিনী অতি শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয়েছে।

ভগবতী দেবী

 ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর—(১৮২০-৯১) মাতা ভগবতী দেবীর জীবনালেখ্য তাঁর মহান পুত্র ঈশ্বরচন্দ্রের কীর্তিকথার মধ্যেই পাওয়া যায়। এর মধ্যেই সঞ্চিত রয়েছে সব উপকরণ। এ বিষয়ে পথিকৃৎ বিদ্যাসাগর জীবনীকার চণ্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৫৮-১৯১৬)। তাঁর রচিত ‘মা ও ছেলে’ গ্রন্থ দু খণ্ডে প্রকাশিত হয় যথাক্রমে ১৮৮৭-৮৯ খ্রীষ্টাব্দে। তারপর ভগবতী দেবীর পৃথক জীবনীগ্রন্থ রচনা করেন প্রিয়দর্শন হালদার।

গ্রন্থকার পরিচয়

 প্রিয়দর্শন হালদার-এর ‘শোক সংবাদ’ আনন্দবাজার পত্রিকার ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯২৮, বুধবার তারিখে প্রকাশিত হয়। এই সংবাদটি এখানে দেওয়া হল—

 ‘খুলনা জেলার কপোতাক্ষ নদ তীরস্থ ধান্দিয়া গ্রামনিবাসী প্রিয়দর্শন হালদার মহাশয় গত বৃহস্পতিবার রাত্রি ১১॥০ ঘটিকার সময় ৫৬ বৎসর বয়সে পরলোকগমন করিয়াছেন; আর্য্যগৌরব, ভারতচিত্র, বিদ্যাসাগর জননী—ভগবতী দেবী, প্রিয় প্রসঙ্গ প্রভৃতি গ্রন্থ প্রণেতা হিসাবে তাঁহার নাম বঙ্গ সাহিত্যানুরাগী ব্যক্তি বর্গের নিকট সুপরিচিত। তিনি দীন দুঃখীর প্রতি সদয় ছিলেন ও বহু সৎকার্য্য করিয়া গিয়াছেন। তিনি বিধবা পত্নী ও একটী নাবালক পুত্র রাখিয়া গিয়াছেন। আমরা তাঁহাদের শোকে সমবেদনা জ্ঞাপন করিতেছি।

 প্রিয়দর্শন হালদার ‘আর্য্যভূমি’ সাময়িক পত্র সম্পাদনা ও প্রকাশ করেছিলেন। এই পত্রিকা প্রায় তিন বছর (১৩১৩—১৩১৫) চলেছিল।

 প্রিয়দর্শন হালদার রচিত এই কয়টি গ্রস্থের সন্ধান পাওয়া যায়—

 ১। ভারত-চিত্র। ১ম সংস্করণ ডিসেম্বর ১৯১৪। ২য় সংস্করণ, কলিকাতা, এস, সি, আড্ডি এণ্ড কোং, নভেম্বর ১৯১৬, ২+২+১৯৪ পৃষ্ঠা।