বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
শকুন্তলা

লেন বৎসে! এত কাতর হইতেছ কেন! তুমি পতিগৃহে গিয়া গৃহিণী পদে প্রতিষ্টিত হইয়া, সাংসারিক ব্যাপারে অনুক্ষণ এরূপ ব্যস্ত থাকিবে, যে আমার বিরহজনিত শোক অনুভব করিবার অবকাশ পাইবে না। শকুন্তলা পিতার চরণে নিপতিত হইয়া কহিলেন তাত! আবার কত দিনে এই তপোবনে আসিব? কণ কহিলেন বৎসে! সসাগরা ধরিত্রীর একাধিপতির মহিষী হইয়া এবং অপ্রতিহতপ্রভাব স্বীয় তনয়কে সিংহাসনে সন্নিবেশিত ও তদীয় হন্তে সমস্ত সাম্রাজ্যের ভার সমর্পিত দেখিয়া, পতি সমভিব্যাহারে পুনর্ব্বার এই শারসাম্পদ তপোবনে আসিবে।

 শকুন্তলাকে এইরূপ শোকাকুলা দেখিয়া গোতমী কহিলেন বাছা! আর কেন, ক্ষান্ত হও, যাবার বেলা বহিয়া যায়। সখীদিগকে সাহা কহিতে হয় কহিয়া লও। আর বিলম্ব করা হয় না। তখন শকুন্তলা সখীদিগের নিকটে গিয়া কহিলেন। সখি! তোমরা উভয়ে এককালে আলিঙ্গন কর। উতয়ে আলিঙ্গন করিলেন। তিন জনেই ৱেদন করিতে লাগিলেন। কিয়ৎক্ষণ পরে সখীরা শকুন্তলাকে কহিলেন সখি! যদি রাজা শীঘ্র চিনিতে না পারেন তবে তাহাকে তাহার স্বনামাঙ্কিত অঙ্গুরীয় দেখাইও। শকুন্তলা শুনিয়া সাতিশয় শঙ্কিত হইয়া কহিলেন সখি! তোমরা এমন কথা বলিলে কেন, বল? আমার হৃৎকম্প হইতেছে। সখীরা কহিলেন না সখি! ভীত হইও না; স্নেহের স্বভাবই, অকারণে অনিষ্ট আশ্রণ করে।

 এইরূপে ক্রমে ক্রমে সকলের নিকট বিদায় লইয়া-শকুন্তলা, গোতমী প্রভৃতির সমভিব্যাহারে, দুষ্মন্তরাজধানা প্রতি প্রস্থান করলেন। কণ, অনসূয় ও প্রিয়ংবদা এক দৃষ্টিতে শকুন্তলার দিকে চাহিয়া রহিলেন। ক্রমে ক্রমে শকুন্তলা দৃষ্টিপথের বহি