গিয়া পড়িলেন। শুধু ছয়জন অনুচর তাঁহার সঙ্গে চলিল, বাকী সৈন এই পাগলের কাণ্ড দেখিয়া পিছাইয়া রহিল। কিন্তু প্রতাপ রাও-এর পশ্চাতে দৃষ্টি নাই, কথা শুনিবার সময় নাই। তাঁহার সম্মুখে দুই পাহাড়ের মধ্য দিয়া একটি সরু পথ, ওপারে বহলোলের লোক দাঁড়াইয়া। এই পথে ঢুকিয়া শত্রুবেষ্টিত প্রতাপ ও তাঁহার ছয়জন সঙ্গী শীঘ্রই নিহত হইলেন। তখন বিজাপুরীরা বিজয় উল্লাসে মারাঠাদের উপর ছুটিয়া আসিয়া অনেককে কাটিয়া ফেলিল, “রক্তের নদী বহিল।” (২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৬৭৪)।
অন্যান্য যুদ্ধ
আনন্দ রাও ছত্রভঙ্গ মারাঠা-সৈন্যগণকে সাহস দিয়া আবার একত্র করিলেন। শিবাজী তাঁহাকে সেনাপতি নিযুক্ত করিয়া লিখিয়া পাঠাইলেন, “শত্রুকে পরাজিত না করিতে পারিলে জীবন্ত ফিরিও না। তখন আনন্দ রাও তাঁহার অশ্বারোহী সৈন্য লইয়া বিজাপুর রাজ্যের মধ্যে ঢুকিলেন। দিলির ও বহলোল খাঁ মিলিত হইয়া তাঁহার পথ রোধ করিলেন। কিন্তু আনন্দ রাও প্রত্যহ ৪৫ মাইল করিয়া এত দ্রুত কুচ করিলেন যে দুই খাঁ-ই অপারক হইয়া পথ হইতে ফিরিয়া গেলেন
তাহার পর আনন্দ রাও দক্ষিণে ঘুরিয়া কানাড়ায় প্রবেশ করিলেন। সাঁপগাঁও শহরের বাজার (পেঠ) লুঠিয়া সাড়ে সাত লাখ টাকা পাইলেন (২৩ মার্চ্চ)। দশ ক্রোশ দূরে বঙ্কাপুর নগরের কাছে বহলোল ও খিজির খাঁর অধীনে একদল বিজাপুরী-সৈন্য পরাস্ত করিয়া পাঁচ শত ঘোড়া দুইটি হাতী এবং শত্রুদলের যথাসর্ব্বস্ব কাড়িয়া লইলেন। কিন্তু বহলোল শীঘ্রই ফিরিয়া প্রচণ্ড বেগে তাঁহাকে আক্রমণ করিলেন। মারাঠারা এক হাজার ঘোড়া ও লুঠের মালের কতক ফেলিয়া দিয়া হালকা হইয়া অবশিষ্ট লুঠ লইয়া নিরাপদে নিজ দেশে ফিরিল।